,

হবিগঞ্জে গণধর্ষণ মামলা! দুই ধর্ষকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

জুয়েল চৌধুরী ॥ ভারতীয় সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল সাবধান ইন্ডিয়া, সিআইডি ও বাংলাদেশের ফিল্মকেও হার মানিয়েছে একটি গণধর্ষণের ঘটনা। তবে এটি ছবিতে নয়। বাস্তবে ঘটেছে হবিগঞ্জ শহরেই। দুই ধর্ষক আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মহামারী করেনার মাঝে এ রকম একটি ঘটনা নিয়ে নিয়ে পুরো শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সদর থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী জানান, ১১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেট থেকে ২৫ বছরের এক নারী নতুন ব্রীজ এসে নামেন এবং বানিয়াচং উপজেলার গুনই গ্রামে যাবার জন্য অপেক্ষা করেন। সেখানে অপেক্ষার সময় সিএনজি চালকসহ দুই যুবক তাকে ফুসলিয়ে হবিগঞ্জে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তখন ওই নারী বুঝতে পারেন তাদের কুমতলব। এক পর্যায়ে একটি টমটমে উঠে হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তখন রাত ৮টা হয়ে যায়। এক পর্যায়ে কলিমনগরের স্পিড বেকারের নিকট এসে টমটমের চার্জ শেষ হয়ে যায়। এদিকে ওই সিএনজিটি টমটমের পিছু আসতে শুরু করে। তখন সিএনজি চালক জনি মিয়া কৌশলে ওই নারীকে তার সিএনজিতে তুলে। তখন ওই সিএনজিতে আরও ওই যুবকরা ছিল। দ্রুত সিএনজিটি চালিয়ে ধুলিয়াখাল-মিরপুর সড়কে প্রবেশ করে লস্করপুর ইউনিয়ন অফিসের অদূরে একটি নির্জনস্থানে সিএনজির ভেতরে ওই নারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একের পর এক তিনজন ধর্ষণ করে। তখন নারী বলে আমাকে তুমরা হবিগঞ্জ পৌছে দাও। কাউকে কিছু বলব না। তারা ওই নারীকে নিয়ে হবিগঞ্জে আসার পথে চরহামুয়া পয়েন্টে আসামাত্র দোকানপাট দেখে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ঘেরাও করে সিএনজিসহ দুই ধর্ষককে আটক করে। তখন সিএনজি চালক জনি মিয়া পালিয়ে যায়। আটক দুই যুবক চুনারুঘাট উপজেলার ঝিকুয়া গ্রামের রেনু মিয়ার পুত্র সুজন মিয়া (২৫), কাছম আলীর পুত্র সায়মন আহমেদ শামীম (২০)। স্থানীয় লোকজন আটকদের উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং ভিকটিমকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ও সিএনজি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদি হয়ে গণধর্ষণের মামলা করেছে। গতকাল সোমবার বিকেলে শামীম ও সুজন মিয়াকে হবিগঞ্জ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করলে তারা ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তবে এ মামলার অপর আসামি শায়েস্তাগঞ্জের সিএনজি চালক জনিকে খুঁজছে পুলিশ। ওই নারী জানায়, তার বাড়ি গুনই। তিনি ওই গ্রামের রাজার মিয়ার কন্যা। দুই বছর আগে রাজু মিয়া নামের এক যুবকের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের ৬ মাসের মাথায় বানিয়াচংয়ে মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় মারা যায়। এরপর তিনি সিলেটে একটি কোম্পানীতে চাকরি করে আসছেন। লকডাউনে কোম্পানীর ছুটি থাকায় ঘটনার দিন বাড়ি আসছিলেন।


     এই বিভাগের আরো খবর