,

কততে থামতে চায় বাংলাদেশ!

সময় ডেস্ক ॥ ৫০০ রান ছোঁয়া হলো না আজ। শ্রীলংকার ক্যান্ডিতে পাল্লেকেলের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটায় ২৫ ওভার না খেলেই দিন শেষ করতে হলো বাংলাদেশকে। বৃষ্টি না হলেও সূর্যকে মেঘ ঢেকে বিকেলকে গোধূলি সন্ধ্যা বানিয়ে ফেলে প্রকৃতি। আলোক সল্পতায় ১৫৫ ওভারের পর আর বল মাঠে গড়ায়নি। দ্বিতীয় দিনের সমাপ্তির ঘোষণা ড্রেসিংরুমে বসেই শুনতে হয়েছে মুশফিক-লিটনকে। মাত্র ৭ রান করতে পারলেই অর্ধশতকের ঘরটি পূরণ করতে পারতেন মুশফিক। ঘুমটাও ভালো হতো। কিন্তু কী আর করার মেঘের কাছেই হার মানতে হলো তাদের। ৪৭৪ রানের পর আর ব্যাট চালাতে পারেননি দুই টাইগার। মুশফিক ১০৭ বলে ৪৩ ও লিটন ৩৯ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত রয়েছেন। এদিকে দুইদিন শেষ টেস্টের। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসই শেষ হয়নি। লংকান বোলাররা উইকেট নিতে পেরেছে মাত্র ৪টি। কতটা সময় নিয়ে ইনিংস ঘোষণা দেবেন মুমিনুল? কাল অন্তত দুটি লক্ষ্য পূরণ করতেই হবে। প্রথমত ৫০০ ছুঁতে হবে। আর মুশফিকের হাফসেঞ্চুরি। দুটোই একসঙ্গে হয়ে যাওয়ার কথা। তবুও প্রশ্ন থাকছেই। কততে গিয়ে থামবে বাংলাদেশ? কততে পৌঁছুলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন অধিনায়ক মুমিনুল আর কোচ ডমিঙ্গো? ক্রিকেট বোঝে এমন সবারই জানা, কাল ব্যাট হাতে নেমে ওয়ানডে মেজাজে খেলবেন মুশফিক ও লিটন। কারণ যত দ্রুত সংগ্রহ বাড়িয়ে নেওয়া যায়। দ্বিতীয় দিন শেষে আজ সন্ধ্যায় ভারচুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই জানালেন বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। ডমিঙ্গো বলেছেন, ‘কত রানে ইনিংস ঘোষণা করতে চাই, এটা ঠিক করতে আজ রাতে আমরা আলোচনা করব। তবে কাল সকালে আমাদের দ্রুত কিছু রান লাগবে। কারণ বোলারদের যথেষ্ট সময় দিতে হবে। তৃতীয় দিনটা বেশি সময় ব্যাট হাতে ব্যয় করা ঠিক হবে না। যদি ৫২০ রানের আশেপাশে যেতে পারি, তাহলে আমরা শ্রীলংকাকে চাপে ফেলার সুযোগ পাব।’সময়টা বেশি নিয়ে ফেললে ম্যাচভাগ্য যে ড্রয়ে গড়াবে তা ভালোই জানা ডমিঙ্গোর। কারণ পাল্লেকেলের ব্যাটিং-সহায়ক উইকেটে শ্রীলংকাকে দুবার অলআউট করতে হবে। বাকি তিন দিনে শ্রীলংকার ২০ উইকেট নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। তিন পেসার নিয়ে এটা দুঃসাধ্যই বটে, যেখানে লঙ্কান পেসাররাই ব্যর্থ। পেসাররা খুব বেশি সুইং পাননি, পুরোনো বলেও রিভার্স সুইং হয়নি। শুধু স্পিনাররা যা একটু সুবিধা পেয়েছেন। যদিও খুব একটা টার্ন দেখা যায়নি ঘূর্ণি বলে। যা সুবিধা পাওয়া গেছে ওই পেসারদের বুটের ক্ষত থেকে। এমন একটি হোলে বল পড়েছিল ধনঞ্জয়া ডি সিলভার। তার সেই অফস্পিনে পাওয়া টার্ন থেকেই কট বিহাইন্ড হন মুমিনুল। একই জায়গায় বল ফেলে আরেক সেঞ্চুরিয়ান নাজমুলকে পরাস্ত করেন স্লিপে ক্যাচ উঠিয়ে। সব মিলিয়ে আহামরি বল না করলে কাল শ্রীলংকান ব্যাটসম্যানরাও রাজত্ব চালাবেন তা ঢের ঠাহর করা যাচ্ছে। গোটা পরিস্থিতি মাথায় রেখেছেন বাংলাদেশ কোচ ডমিঙ্গো। বললেন, ‘পাল্লেকেলের উইকেট এমন নয় যে, এখানে ৪০-৫০ ওভারে প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেওয়া যাবে। আমাদের বোলাদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং চাপ বাড়াতে হবে।তাদের সময় দিতে হবে। ধারাবাহিকভাবে ভালো জায়গায় বোলিং করে যেতে হবে এবং সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। এটাই মূল কথা। টেস্টে ২০ উইকেট নেওয়া সহজ নয়। তাই ছেলেদের নিশ্চিত করতে হবে, আগামী কয়েকটি দিন ওরা যেন বোলিংয়ে সুশৃঙ্খল থাকে।’ এখন পর্যন্ত চালকের আসনে বাংলাদেশ-এমনটা বলছেন ক্রিকেটপ্রেমীর। শ্রীলংকায় প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে নেমেই রেকর্ডের ছড়াছড়ি বাংলাদেশ শিবিরে। লম্বা ইনিংস উপহার দিচ্ছেন টপঅর্ডাররা। চাঁদের মাঝে কলঙ্ক একটাই। ওপেনার সাইফের ‘ডাক’। তাতে কি। ৯০ রানের ইনিংস খেলেছেন তামিম। টেস্টে রান সংগ্রহে মুশফিককে পেছনে ফেলেছিলেন। গত ৬ টেস্টে অফফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ছুলেন দেড়শ রানের মাইলফলক। তরুণ এই ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হাঁকিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ১৬৩ রান, ৩৭৮ বলের মোকাবেলায়। হাঁকিয়েছেন ১৭টি চার ও ১টি ছক্কা। এছাড়া ১১তম শতকের দেখা পেয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল হকও। টেস্টে তৃতীয় উইকেটে সবচেয়ে বড় জুটির রেকর্ড গড়লেন দুই সেঞ্চুরিয়ান। তাদের ২৪২ রানের জুটি এখন দেশের পঞ্চম সেরা জুটির রেকর্ড। বল মোকাবিলার হিসাবে শান্ত-মুমিনুলের ৫১৪ বলে ২৪২ রানের জুটি এখন তালিকায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর কি চাই? এখন ৫২০ বা সাড়ে পাঁচশ’র মতো সংগ্রহ করেই ব্যাট শ্রীলংকার হাতে ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয়। এরপর তাসকিন, জায়েদ, এবাদতদের দেখাতে কারিশমা।


     এই বিভাগের আরো খবর