,

আমাদের কি হবে আমাদের কে দেখবে মা অমৃতা, আমি আর কিছু চাই না,লাশ চাই-বিচার চাই

সলিল বরণ দাশ ॥ নারায়ণগঞ্জ ভুলতা এলাকায় সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় দূঘটর্নায় নিখোঁজ অমৃতার মা আনোয়ার বেগম বিলাপ করে বলেন ‘ও অমৃতা রে, এখন কই তুই মা? ও আল্লাহ, তুই ছাড়া এখন আমরার কেউ নাই…। আমাদেরকে আর কে দেখবে মা, আমার বুকে ফিরে আয় মা’। গতকাল হাসেম ফুড লিমিটেডের পুড়ে যাওয়া অমৃতার মা নবীগঞ্জের পূড়ব বড় ভাকৈর (পূর্ব) ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মোতালিব মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বাড়িতে আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন। ওই কারখানাতেই কাজ করতেন তার মেয়ে অমৃতা বেগম (২৯)। গেল শুক্রবার রাতে মায়ের সাথে ফোনে কথা হয়েছিল এই তরুনীর। কিন্তু অগ্নিকান্ডের পর থেকে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন মায়ের একটাই কথা, আমি আর কিছু চাই না,আমি শুধু আমার মেয়ের লাশ চাই- বিচার চাই। আনোয়ার বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাকৈর (পূর্ব) ইউনিয়নের রামপুর। তার স্বামী পঙ্গু, ০৩ মেয়ে ০১ ছেলের সংসারে আমৃতার টাকাই চলতো তাদের সংসার।প্রায়ই টাকা দিয়ে পরিবারকে সহযোগীতা করত। ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সুবাধে স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে তারা নারায়ণগঞ্জের ভুলতা-গাউছিয়ার ভোলাকান্দা-নতুন বাজার(দণি পাড়ার) হাবিব মিয়ার বাড়িতে বাসা ভাড়া করে থাকতো। তিন মেয়ে এক ছেলের মধ্যে সবচেয়ে বড় মেয়ে অমৃতা। বড় ভাই বিয়ে করে আলাদা সংসার নিয়ে থাক। অল্প বয়স থেকে সে বাবা-মাকে দেখছে। শত বাধার মধ্যেও চালিয়ে যায় স্বামীর সংসারের সাথে বাবা-মার সংসার। ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশোনা করে সংসারের হাল ধরেছে। সংসারের হাল ধরতে ৫ হাজার ৭০০ টাকা বেতনে চাকরি নেন গত জুনে হাসেম ফুড লিমিটেডে।সুমা নামে ৭ বৎসরের এক মেয়ে আছে।তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি শংকিত। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, একটি দুর্ঘটনায় এক মুহূর্তে সবকিছু যেন এলোমেলো হয়ে গেল।কথাগুলো শেষ না হতেই ঢুকরে কেঁদে ওঠেন আনোয়ার বেগম। স্মৃতি টেনে কেঁদে কেঁদে বলেন, আগামী কোরবানির ঈদে আমি বাড়ি আসবো সবার জন্য নতুন কাপড় নিয়ে আসবো। এবার সবাইকে নিয়ে বাড়িতে ঈদ করবো। বাবা রে, আমার অমৃতা রে, আমার কিছু লাগবো না মা, তুই আমার বুকে ফিইরা আয়।’তুই ছাড়া আমাদেরকে কে আর কে দেখবো। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকায় সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় গত ৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিখোঁজ শ্রমিকদের মধ্যে আনোয়ারা বেগমের মেয়ে আমৃতা একজন।


     এই বিভাগের আরো খবর