,

নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের তদন্ত শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ নিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে বিরোধ নিরসনে ব্যর্থ হয়েছেন সর্বমহল। একাধিকবার শালিস বৈঠকে মসজিদ নিয়ে চলমান দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তির রায় ঘোষণা করলেও তা বাস্তবায়ন করতে অনিহা জানাচ্ছে মসজিদ কমিটি। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের আহবানে বর্তমান মসজিদ কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটির লোকজন শালিস বৈঠকে উপস্থিত হয়ে শালিসে রায় মানলেও বাস্তবে তা বাস্তবায়ন করতে নারাজ তারা। এনিয়ে লোকমুখে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলছেন, মসজিদ নির্মাণ দেখিয়ে লন্ডন প্রবাসী সালেহা বেগমের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নেন মসজিদ কমিটির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমানের আপন চাচা। এরপর থেকেই ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ পরিবর্তন করে তার নাম হয় সালেহা জামে মসজিদ। এতে করে এলাকায় চরম ােভের সৃষ্টি দেখা দেয়। পরে ১৯৯৩ সালে ইনাগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ আহমেদ জিহাদীর নেতৃত্বে এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে পড়ে তৎকালীন কমিটি। ইনাগঞ্জ বাজার নাম পরিবর্তন কেন করা হলো এমন প্রশ্নের জবাব চাওয়া হয় কমিটির কাছে। তৎকালীন কমিটির লোকজন স্থানীয়দের প্রশ্নের জবাবে সঠিক কোনো কারণ দেখাতে না পারলে স্থানীরা সালেহা বেগমের নামের নাম ফলক ভেঙে ফেলেন। পরবর্তীতে আবারও নাম ফলক লাগানো হয়। তবে দুই নামে। এ সময় বাদ পড়ে ভূমিদাতা পরিবার গুলো। দীর্ঘ ৩০ বছরের অধিক আন্দোলন সংগ্রাম করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে মসজিদ রায় অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে দাড়ান ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশা। ভূমি দাতা হিসাবে আশাহিদ আলী আশা বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনে আবেদন করেন মসজিদ কমিটির অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এরই প্রেক্ষিতে ওয়াকফের পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন গত সোমবার ৩০ আগষ্ট সকাল ১১টায় সরজমিনে ইনাতগঞ্জ বাজার মসজিদ পরিদর্শন এবং মসজিদ কমিটি ও আবেদনকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করেন। মসজিদ কমিটির প্রতিনিধি আমিনুর রহমান ও দাতা সদস্য আশাহিদ আলী আশাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ৫ দিনের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেন। তদন্তকালীন সময় উপস্থিত ছিলেন মসজিদ কমিটির সদস্যবৃন্দ দাতা পরিবারের সদস্য গ্রাম্য শালিস বিচারক, মসজিদের মুসল্লিগণসহ অনেকে। বিশেষ সুত্রে প্রকাশ, গত ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার ইউএনও অফিস কক্ষে সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতির মাধ্যমে ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের প্রায় ৩০ বছরের বিরোধ কাগজপত্র পর্যালোচনা করে রায় ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন। রায়ে বলা হয় মসজিদের প্রতিষ্টাতা ভূমিদাতা সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশার পরিবার। ভূমিদাতা হিসাবে আশাহিদ আলীর পরিবারকে ভূমিদাতা স্বীকৃতি দিয়ে নামফলক ব্যবহার করবেন। কিন্তু ১৫ দিন ৩ শুক্রবার অতিবাহিত হলেও এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এ রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রতিনিধি মৌলভীবাজার থেকে আসা সাখাওয়াত হোসেন ওয়াকফ পরির্দশক জানান, সরেজমিনে তদন্ত করেছেন এবং মসজিদ কমিটি এবং দাতা সদস্যকে ৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন প্রদান করবো।


     এই বিভাগের আরো খবর