,

হবিগঞ্জে ‘নদী পরিভ্রমণ’ নদী বাঁচানোর আহ্বান

সংবাদদাতা ॥ ২৬ সেপ্টেম্বর রবিবার বিশ্ব নদী দিবস। নদী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘মানুষের জন্য নদী’। নদী দিবসকে সামনে রেখে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) খোয়াই নদীতে ‘নদী পরিভ্রমণ’ আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখা ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ, যথাযথভাবে নদী খনন করে খোয়াই নদীর গতিপথ অবারিত রাখা, খোয়াই নদী, পুরাতন খোয়াইসহ জেলার অন্যান্য নদী রক্ষায় নানান ধরণের দাবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে খোয়াই মুখ এলাকা থেকে মশাজান পর্যন্ত নদী পরিভ্রমণ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তারা বলেন- নদী সচল না থাকলে সব কিছুরই ছন্দপতন ঘটবে। নদী আমাদের সার্বিক পরিবেশ- প্রতিবেশ, অর্থনীতি ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন বিনোদন ইত্যাদি সকল কিছুরই উৎস। কিন্তু দিন দিন আমাদের নদীগুলো বিপন্ন হয়ে পড়েছে। খোয়াই, পুরাতন খোয়াই, সুতাং নদীসহ জেলার সকল নদীর উপর চলছে নানামুখী অত্যাচার। তারা বলেন- একদিকে নদীর বুক থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নদী দখল অন্যদিকে শিল্প কারখানার বর্জ্য নিক্ষেপ এর কারণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে নদী। পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার ক্ষেত্রে অপরিহার্য নদী রক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা নজরে পড়ছে না। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল এর সমন্বয়ে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক জনপ্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী মুমিন, বিশিষ্ট রাজনীতিক ও সাবেক জনপ্রতিনিধি মো. হাবিবুর রহমান, এডভোকেট বিজন বিহারী দাস, বিশিষ্ট চিকিৎসক পরিবেশ কর্মী এস এস আল-আমীন সুমন, আফরোজা ছিদ্দিকা, সাংবাদিক আব্দুল হালিম, তানভীর হোসেন, তারুণ্য সোসাইটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম, সংস্কৃতিকর্মী মো. আবিদুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আল আমিন, মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী, মো. হুমায়ূন খান, মুনির উদ্দিন, এটি এম কদর আলী, মো. মইনুল ইসলাম, সমীরণ গোপ, মো. সোহান প্রমুখ। নদী পরিভ্রমণকালে বক্তারা বলেন, বহু বছর ধরেই খোয়াই নদীর নাব্যতার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। খোয়াই নদী খনন না হওয়াতে নদীর তলায় পলি ও বালি জমে স্থানে স্থানে চড়া পড়েছে। নদীর তলদেশ শহর থেকে ১২/১৫ ফিট উঁচু হয়ে উঠেছে। এছাড়াও খোয়াই নদী থেকে যন্ত্র দ্বারা অপরিকল্পিত-অনিয়ন্ত্রিত বালু, মাটি উত্তোলনের কারণে নদী সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে এবং নদীর বিভিন্ন স্থানের বাধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নদীতে বর্জ্য নিক্ষেপের ফলে পানি দূষণ ইত্যাদি বিরাজমান। খোয়াই নদী খনন করে নদীর তলদেশ শহর থেকে কমপক্ষে ১০ ফুট গভীরে নিতে হবে, অবৈধ মাটি-বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে, নদীর তীরে নিক্ষিপ্ত বর্জ্য অপসারণ করে বর্জ্য নিক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। পুরাতন খোয়াই নদীর কথা উল্লেখ্য করে বক্তারা বলেন, এই নদীটি বৃষ্টির পানি ও অন্যান্য পানি নিষ্কাশন, নদী পাড়ে যাতায়াত ও সুন্দর পরিবেশের জন্য নদীটি গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্টিপক্ষের উদাসীনতা, দাযড়ত্বে অবহেলা ও ভূমি দখলকারিদের অবৈধ দখলের কারণে পুরাতন খোয়াই নদী বিলীন হওয়ার পথে। ফলে জলাবদ্ধতা, পরিবেশ বিপর্যয় মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।


     এই বিভাগের আরো খবর