,

নবীগঞ্জ সদর ইউপিতে হত্যা মামলার আসামী হাবিবকে মনোনয়ন দেয়ায় ছাত্রলীগের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮নং নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা হেভেন হত্যা মামলার প্রধান আসামী হাবিবুর রহমান হাবিবকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড়ে নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে হাবিবুর রহমান হাবিবকে মনোনয়ন দেয়ায় ক্ষুব্দ হয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রাজু সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিহত হেভেনের দাদা প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, চুনু মিয়া, মো. নুরুজ্জামান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু ছালেহ জীবন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা আবিদ হাসান তালুকদার, মিজান খান প্রমূখ। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে নবীগঞ্জ শহরের প্রদান প্রদান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নতুন বাজার মোড়ে এসে শেষ হয়। উক্ত সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, ২০১৪ সালে হাবিবুর রহমান হাবিবের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতা হেভেন চৌধুরীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি, মা-বাবার চোখের পানি এখনো ঝড়ছে, অবিলম্বে হাবিবের আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন বাতিল করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বিক্ষোভ সমাবেশের খবর পেয়ে একাত্মতা পোষন করতে মানববন্ধনে যোগ দেন নিহত ছাত্রলীগ নেতা হেভেন চৌধুরীর দাদা সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, নুরুজ্জামান, সাবেক ইউপি সদস্য বিশিষ্ট মুরুব্বী মোঃ চুনু মিয়া। এ সময় কান্না বিজরিত কন্ঠে হেভেনের দাদা সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা হেভেন চৌধুরী নির্মমভাবে হত্যা করে হাবিবসহ সন্ত্রাসীরা। হাবিবকে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ায় হেভেন হত্যা মামলার বিচার কার্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট খুনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবের মনোনয়নপত্র বাতিলসহ তার দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানান। এ প্রসঙ্গে হেভেন চৌধুরী হত্যা মামলার বাদী হেভেনের পিতা মকবুল হোসেন চৌধুরী বলেন, হেভেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবীত ও অনুপ্রাডুত হয়ে ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে কাজ করেছে। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় হেভেনকে হত্যার ঘটনায় যেখানে আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশনা দেয়ার কথা ছিল সেখানে হেভেন চৌধুরীকে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী হাবিবুর রহমান হাবিবকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিয়ে পুরষ্কৃত করা হল সত্যি বিষয়টি দুঃখজনক। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৩ মার্চ নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা হেভেন চৌধুরীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামী হাবিবুর রহমান হাবিব। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। ২০১০ সালের ৭ মার্চ জলমহাল ইজারা নিয়ে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব) সুলতানা ইয়াসমীনকে লাঞ্চিত করেন হাবিবুর রহমান হাবিব। পরে এ ঘটনায় ইউএনও বাদি হয়ে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের ব্যবসায়ি সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ২০ লক্ষ টাকা এনে আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে (সিআর ৬৩/২১) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর