,

সংবাদ প্রকাশের পর সদর হাসপাতালে সারিবদ্ধভাবে রাখা হল এম্বুলেন্স!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ দীর্ঘদিন ধরে অ্যাম্বুলেন্স সংকটে ভুগছে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল। সরকারি একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এতে করে গরীব ও অসহায় রোগীদেরকে চরম মাশুল গুনতে হচ্ছে। এ সংকট সমাধানে কোন মাথাব্যথা নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। গতকাল বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকায় এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গতকাল সরজমিনে দেখা যায়, ইচ্ছা করেই শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকের এম্বুলেন্স এনে হাসপাতালের সামনে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এব্যাপারে বেশ কজন চালক জানান, প্রতিমাসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে কমিশন নিচ্ছেন। সংবাদ প্রকাশ হলেও তাদের কিছ্ইু হবে না বলে জানায়। উল্লেখ্য হাসপাতালের কতিপয় ব্রাদার ও কর্তৃপক্ষের কয়েকজন অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায় জড়িত। আশ্বর্য্যরে বিষয় হল অবৈধ অ্যাম্বুলেন্সগুলোর অধিকাংশেরই লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাজগপত্রও নেই। হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল গ্যারেজে চারটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও তিনটিই অকেজো। দু’জন ড্রাইভার আর একটি অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে দিবা-নিশি সার্ভিস দেয়ায় অচিরেই বর্তমানটিও অকেজো হয়ে পড়তে পারে এমন শংকায় ভুগছেন সংশ্লিষ্ঠরা। হাসপাতাল চত্বরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে বিভিন্ন রঙ বেরঙের অর্ধশতাধিক অ্যাম্বুলেন্স। তবে এগুলোর কোনটাই সরকারি নয়, সবগুলোই বেসরকারি মালিকানাধীন। নামের ক্ষেত্রেও রয়েছে ভিন্নতা-আল মারজান, শেফা, জন্নাত অ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদি। আবার অনেকটি রয়েছে ভাসমান। কাছে যেতেই শোনা যায় রোগীদের সাথে চালকদের ভাড়া নিয়ে দরকষাকষি। প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সগুলোর ভাড়া মূলত নির্ধারণ হয়ে থাকে সুযোগ-সুবিধা ও গুণগত মান অনুযায়ী। এব্যাপারে হাসপাতালে আসা রোগীরা জানান, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় বেশি ভাড়া দিয়েই সিলেট ও ঢাকা যেতে হচ্ছে। আর এ সুযোগটিকেই কাজে লাগাচ্ছে কতিপয় স্বার্থান্বেষী লোক। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে রোগী সেবার জন্য হবিগঞ্জ-সিলেটের ভাড়া ২২-২৪শ’ টাকা, ঢাকার জন্য নির্ধারিত ভাড়া ৩ হাজার-৩৫শ টাকা। অন্যদিকে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের ক্ষেত্রে গুনতে হচ্ছে অনির্ধারিত ভাড়া। এক্ষেত্রে সরকারি ভাড়ার চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি দিয়ে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, রোগীদের সেবা অনুযায়ী এসি, অক্সিজেন ও নেবুলাইজারেরও ভাড়া গুনতে হচ্ছে। দিনের তুলনায় রাতের ভাড়া দিতে হচ্ছে চড়া হারে। সদর হাসপাতালের জনৈক অ্যাম্বুলেন্স চালক জানায়, বছর তিনেক পূর্বেও হাসপাতালটির জন্য দুটি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ছিল। পার্স নষ্ট হওয়ার কারণে তিনটি গাড়িই গ্যারেজে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্তমানে রোগীর তুলনায় একটি গাড়ি দিয়ে কোনভাবেই সেবা দেয়া সম্ভব হচ্চে না। সূত্র জানায়, হাসপাতালের কতিপয় ব্রাদার ও নার্সদের প্রাইভেট এম্বুলেন্স রয়েছে। যেগুলো সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থেকে বেশী গুরুত্ব পাচ্ছে। আর এগুলো দালালদের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর