,

নবীগঞ্জে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে

উত্তম কুমার পাল হিমেল ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এখন বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানির স্তর একেবারে নীচে নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলগুলো ও মটর মেশিন চালিয়েও পর্যাপ্ত পরিমান পানি উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এ শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমান বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পানির এ রকম সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে নবীগঞ্জ উপজেলা ৪ শত ২৮টি গ্রামের সব টিউবওয়েলগুলোতেই পানি ঠিকমত না উঠায় সাধারন মানুষ পড়েছেন মারাত্মক বিপাকে। বোরো ফসলের মৌসুম হওয়ায় বেশিরভাগ বোরো জমিতে শ্যালো মেশিন বসানোর ফলে পানির এ রকম সংকট দেখা দিয়েছে বলেও মনে করেন তারা। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে খোঁজ নিয়ে ও সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েলগুলোতে পানি না উঠার কারণে প্রায় টিউবওয়েলগুলিই অকেজো হয়ে পরে আছে। তাই গ্রামের সাধারন মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানি না পেয়ে পুকুর ও ডোবার পানি সংগ্রহ করে পিটকিরি দিয়ে ফুটিয়ে খাবার উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করছেন। যার ফলে তাদেরকে মারাত্মক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থা এখন শুধু বিভিন্ন গ্রামেই নয় শহর এলাকায়ও গভীর নলকুপ থেকে মোটর মেশিনের সাহায্যে পাতাল থেকে পর্যাপ্ত পরিমান পানি উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ েেত্র গ্রামের মানুষের মত শহরের মানুষও বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য পড়ছেন মারাত্মক বিপাকে। কোন কোন পরিবারের লোকজন বাজার থেকে মিনারেল ওয়াটার জার, বোতল কিনে এনে খাবার পানির চাহিদা মেঠালেও বাসার অন্যান্য কাজের পানি যোগার করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ঠিকই। যার ফলে অনেক এলাকায় ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে মারাত্মকভাবে। সরজমিনে নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কয়েকটি বাড়ীতে গিয়ে টিউবওয়েলের হাতল চাপলে দেখা যায় বেশির ভাগ টিউবওয়েলেই ফোটা ফোটা হয়ে পানি পড়ছে। যার ফলে অধিকাংশ টিউবওয়েলই অকোজো হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। সদর ইউনিয়নের আদিত্যপুর গ্রামের গৃহবধু মায়া রানী, মাসিদা আক্তার এ প্রতিনিধিকে জানান, পানির কল গুলোতে কি যে হল এক কলস পানি ভরতে আধাঘন্টা লেগে যায়। পানির কল চাপতে চাপতে হাত ব্যাথা করে। টিউবওয়েলের হাতল চাপতে গিয়ে অনেক কিশোর-কিশোরী ও বৃদ্ধ লোক হাত ফসকে গিয়ে গুরুত্বর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কানাইপুর, আদিত্যপুর, দত্তগ্রাম, গহরপুর, আমতৈল, রাইয়াপুর, ফুটার মাটি, কুর্শি, বাংলাবাজার মান্দারকান্দিসহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে প্রায় প্রতিটি গ্রামের টিউবওয়েলগুলোতেই প্রয়োজনের মত পানি উঠছে না। তবে ঐ সকল গ্রামের যে ১/২টি টিউবওয়েলে কিছু পানি উঠছে সেগুলোতে লাইনে দাড়িয়ে মহিলা পুরুষরা খাবার পানি সংগ্রহ করছেন। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে মারাত্মক ভোগান্তি দেখা দিয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর