,

নবীগঞ্জ কলেজে ইভটিজিং নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১ :: শুধু ছাত্রদল ও সাধারণ ছাত্রদের আসামী করে মামলা!

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : নবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে ছাত্রীর ইভটিজিং এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হেভেন আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অনন্ত ১৫ জন শিক্ষার্থী। গতকাল সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হেভেন আহমেদ পৌর এলাকার মদনপুর গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় আগামী শনিবার পর্যন্ত কলেজের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার করিমপুর এলাকার আবু সামার ছেলে ও কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ফয়সাল সম্প্রতি একই ক্লাসের এক ছাত্রীকে কয়েক দিন আগে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ওই ছাত্রী তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিষয়টি তার অভিভাবকদের জানায়। এ নিয়ে রবিবার বিকেলে ওই ছাত্রীর বাবা ফয়সালের বাড়িতে গিয়ে তাকে সামলানোর জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করেন। এতে ফয়সাল ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার সকালে কলেজে গিয়ে ওই ছাত্রীকে আবারো উত্যক্ত করে। খবর পেয়ে ছাত্রীর স্বজনরা কলেজ কতৃপক্ষ ও ছাত্রনেতাদের দারস্থ হন। প্রকাশ্যে এমন অন্যায় দেখে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান, কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি অলিউর রহমান অলি, ছাত্রনেতা মিজানুর রহমান, ছাত্রনেতা আলীমুল ইসলাম, কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সম্পাদক আবুল ফাত্তাহ চৌধুরী, আবুল কাশেম, তৌহিদুল ইসলামসহ ছাত্রনেতারা। কিন্তু তারা এর প্রতিবাদ করায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ফোনের মাধ্যমে বহিরাগত লোকজন নিয়ে ফয়সাল, মোজাক্কির, কাশেম, পারভেজ, সুহেলসহ নবীগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বখাটেরা তাদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংর্ঘষে প্রতিপক্ষের আঘাতে শিক্ষার্থী হেভেন আহমেদ নিহত হন। এতে আতঙ্কিত হয়ে দ্বিগিদিগ ছোটাছুটি করে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অন্তত ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলী ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। কলেজের অধ্য সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রী উত্যক্তের বিষয়টি তিনি জানতেন না। সোমবার বিষয়টি জানার পরপরই অফিসের বাইরে দুইপরে সংঘর্ষ চলতে দেখেন। শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে শনিবার পর্যন্ত কলেজের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের পিতা আব্দুল আলী। ওই মামলায় উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে শুধু ছাত্রদল, ছাত্রনেতা ও সাধারণ ছাত্রদের আসামী করা হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন, কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি অলিউর রহমান অলি, ছাত্রনেতা আলীমুল ইসলাম, ছাত্রদলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ মান্না, ইফতেখার আলম, কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল ফাত্তাহ চৌধুরী, আবুল কাশেম, জুনেদ আহমেদ, রায়হান মিয়া, তৌহিদুল ইসলাম, জিহাদ, সুমনসহ অর্ধশতাধিক ছাত্রনেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থী।
মামলার আসামীর তালিকায় কোন ছাত্রলীগ নেতার নাম না থাকায় সচেতন মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, ঘটনার মূল নায়ক ছাত্রলীগ নেতারা। তাদের কারণে এ সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়ে সাধারণ ছাত্র নিহত হয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ঘটনাকারী ক্ষমতাসীন দল ছাত্রলীগের কাউকে আসামী করা হয়নি। যা দুঃখজনক। মামলার বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেন জানান, ‘কলেজ ছাত্র নিহতের ঘটনায় থানায় যাদের আসামী করে মামলা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। আমাসীর তালিকায় কোন ছাত্রলীগ নেতার নাম নেই কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, সেটা মামলার বাদী ভালো জানেন। নিহতের পিতা যাদেরকে আসামী করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেছি।


     এই বিভাগের আরো খবর