,

নবীগঞ্জে মামলা থেকে খালাস পেলেন প্রেমিকসহ অসহায় ৫ ব্যক্তি

সংবাদদাতা : প্রেমকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে কত প্রেমিক জুগল নানান ইতিহাস তৈরী করে গেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নবীগঞ্জে জনৈক স্কুল ছাত্রীর সাথে রেফ্রিজারেশ ওয়ার্কসপ ব্যবসায়ী দুলনের সাথে প্রেমের সখ্যতা গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা রাতে গোপনে গোপনে দেখা স্বাক্ষাত করতে শুরু করে। এ বিষয়টি এলাকার কিছু কিছু মানুষের নজরেও আসে। এর মধ্যে হঠাৎ গভীর রাত ৩টার দিকে প্রেমিকার ঘর থেকে বের হওয়ার সময় প্রেমিকার পরিবারের লোকজনের নজরে আসলে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দিলে প্রেমিক মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। পর দিন সকালে নবীগঞ্জের আউশকান্দি রেফ্রিজারেশ ওয়ার্কসপে গিয়ে প্রেমিকার পরিবারের প্রভাবশালী লোকজন ব্যবসায়ী দুলনকে ধরে এনে উত্তম মধ্যম দিয়ে থানা পুলিশে সোর্পদ করে। এতে থানা পুলিশ থেকে রক্ষা পায় প্রেমিক দুলন। কিন্তু এ মামলায় প্রেমিক জেল না খাটলেও অন্য ৪ জন নিরপরাধ ব্যক্তি কারাভোগ করতে হয়েছে। তবে, সত্যের জয় একদিন হয় এটাই সত্য। তাই ১০ বছর ৬ মাস পর বিজ্ঞ আদালত সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়ে দেন। রাখে আল্লাহ মারে কে? এ ঘটনাটি ঘটেছে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকন্দি ইউনিয়নের আমোকুনা গ্রামে। মামলা থেকে খালাস প্রাপ্ত অসহায় দিন মজুর সিএনজি চালক সামছু মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আমাদেরকে মিথ্যা মামলা ও হামলা করে আসছে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের আমোকুনা গ্রামের আহমদ চৌধুরী, কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, গৌছসহ তাদের লোকজন। আহমদ চৌধুরী’র মেয়ে শাম্মি চৌধুরী বিগত ২০১২ সালে আউশকান্দি রশিদিয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল ছাত্রী ছিল। সে আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজারের রেফ্রিজারেশ ওয়ার্কসপ ব্যবসায়ী দুলনের সাথে প্রেমের সখ্যতা গড়ে তুলে। এতে তারা একে একে অপরকে কাছে পেতে বিভিন্ন সময় স্কুল ফাকিঁ দিয়ে প্রেম লিলায় মগ্ন হয়ে দুলনের দোকান সহ অন্যান্য যাওয়া আসা করতো বলে এলাকাবাসীও বলেন। এতে প্রেমিকা শাম্মি তার প্রেমিককে আরো কাছে পেতে প্রায়ই দিন রাতেই প্রেমিক দুলন তাদের বাড়িতে যাওয়া আসা করতো। গত ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ রাত সাড়ে ৩ টার দিকে প্রেমিকা শাম্মির ঘর থেকে প্রেমিক দুলন বেরিয়ে আসার সময় প্রেমিকার পরিবারের নজরে আসলে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দিলে প্রেমিক দুলন তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে আসে। পরদিন ভোর বেলা আহমদ চৌধুরী, কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, গৌছ সহ আমোকুনা গ্রামের লোকজন দুলনের দোকানের চতুর দিক ঘেরাও করে রাখেন। সে ঘুম থেকে ওঠা মাত্রই তাকে ধরে আমকোনা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে তাকে বেধরক মারপিট করা হয়। অবশেষে প্রেমিকার বাবার লাতি পর্যন্ত খেতে হয়েছে তাকে। অবশেষে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুলনকে থানায় নিয়ে যায়। ডাকাত সর্দার বলে দুলনকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও সু-চতুর প্রেমিক দুলন পুলিশের নিকট থেকে রক্ষা পায়। পর দিন নবীগঞ্জ থানার এসআই মিজান আউশকান্দি মাদ্রাসা পয়েন্ট এলাকা থেকে আমাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আমাকে ও আমার বড় ভাইকে আসামী করে আমাকে বাউশার একটি মামলা দেখিয়ে কোর্টে চালান করে পুলিশ। এরপর ঐ প্রভাবশালীরা বাদী হয়ে আরো একটি মামলা দায়ের করে থানায়। এতে আরো ৩ স্থানের ৩ জনকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। এ মামলায় আমি ১৭ দিন কারাভোগ করে জামিনে মুক্ত হয়ে মামলা চালাতে থাকি। আমার বিশ্বাস ছিল এ মামলায় আমাদের জয় হবে। কারণ আমি এসব কিছুই জানিনা বা করিনি। এই বিশ্বাস নিয়ে নানান আলোচনা সমালোচনার মধ্যে ১০টি বছর পার করেছি। আমার মায়ের চোখের জ্বলে বুক ভাসতো প্রতিনিহত। এসব দেখার মতোও কেউ ছিল না, ছিলেন শুধু আল্লাহ। হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট বিচারক-১ আদালত গত ২৮/০৪/২০২২ইং তারিখে ১০ বছল ৬ মাস পর ঐ মিথ্যা মামলাটি বিজ্ঞ আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সামছুল আরো জানায়, মিথ্যা মামলায় আমি ১৭ দিন জেল কাটতে হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর