,

বাহুবলে সৎ মায়ের অমানুষিক নির্যাতন :: পিতার দালান ঘর থাকা সত্বেও কোলা আকাশের নিচে ঈদ উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার:  বাহুবলের পুটিজুরীতে সৎ মায়ের নিঠুরতা ও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার প্রবাসী আফতাব উদ্দিনের প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে ও বড় মেয়ে সিলেট এমসি কলেজে অধ্যায়নরত মেধাবী ছাত্রী শামিমা আক্তার।পিতার বিশাল দালান ঘর থাকা সত্বেও কোলা আকাশের নিচে তারা ঈদ উদযাপন করেছে। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড মেম্বারের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এই অমানুষিক নির্যাতনের শেষ কোথায় বলে এলাকায় রসালো আলোচনা-সালোচনার ঝড় বইছে!
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মন্ডলকাপন গ্রামের মৃত দুধা মিয়ার ছেলে ওমান প্রবাসী মোঃ আফতাব উদ্দিন প্রায় ২৫ বছর পূর্বে বিয়ে করেন নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩নং পানিউমন্দা ইউনিয়নের পানিউমন্দা গ্রামের মোছাঃ রহিমা খাতুনকে।বিয়ের পর আফতাব উদ্দিনের প্রথম স্ত্রী মোছাঃ রহিমা খাতুনের গর্ভে এক মেয়ে ও দুই ছেলে জন্মগ্রহণ করে।কিন্তু নারীলোভী আফতাব উদ্দিন বিভিন্ন নারীদের সঙ্গ নিয়ে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের কোন খোঁজখবর নেয়নি আফতাব উদ্দিন। এর পর থেকে অনেক দুঃখ কষ্টে ছেলে মেয়ের ভরনপোষণ করেন রহিমা খাতুন। পরবর্তীতে মেয়ে ও ছেলেদের ভরনপোষণের দাবীতে পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। একপর্যায়ে প্রথম স্ত্রী মোছাঃ রহিমা খাতুনের মামলায় স্বামী আফতাব উদ্দিনকে কারাগারে পাঠান বিজ্ঞ আদালত। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর স্ত্রী ও ছেলে মেয়ের ভরনপোষণের শর্তে আদালত থেকে জামিনে আসেন আফতাব উদ্দিন। এর কিছুদিন পর আফতাব উদ্দিন ওমান প্রবাসে চলে যান। চতুর চালাক আফতাব উদ্দিন প্রবাসে গিয়ে প্রথম স্ত্রী রহিমা খাতুন ও সন্তানদের ভুলে যান। দ্বিতীয় স্ত্রী মোছাঃ জমিলা খাতুনের নামে টাকা পয়সা পাঠান আফতাব উদ্দিন। এরমধ্যে আফতাব উদ্দিনের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়।গত বছর আফতাব উদ্দিন প্রবাস থেকে দেশে আসার পর আবারও স্ত্রী সন্তানের ভরনপোষণের শর্তে আদালত থেকে জামিনে আসেন। আফতাব উদ্দিন পারিবারিক বিষয়াদি শেষ না করেই গোপনে প্রবাসে চলে যান। ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রথম স্ত্রীর বড় মেয়ে সিলেট এমসি কলেজের শিক্ষার্থী শামিমা আক্তার বাড়িতে আসলে সৎ মা জমিলা খাতুন ঘরটি তালাবদ্ধ করে বাবার বাড়ি উপজেলার স্বস্তিপুর গ্রামে চলে যান। শামীমা আক্তার ছোট দুই ভাই ফারহান ও হাসানকে নিয়ে কোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেন।একপর্যায়ে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শেফা আক্তার ও ওয়ার্ড মেম্বার লিটন মিয়ার দারস্থ হন। ওয়ার্ড মেম্বার লিটন মিয়া ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শেফা আক্তার ঘরের চাবির জন্য সৎ মা জমিলা খাতুন ফোন দিলে উল্টো হুমকি ধামকি দেয়া শুরু করে। এদিকে কলেজ ছাত্রী শামীমার গোসল ও বাথরুমের সমস্যার কারণে ঘর প্রবেশ করামাত্রই পুলিশ নিয়ে চলে আসে সৎ ভাই ও তার মামা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ড মেম্বার লিটন মিয়া, ওয়ার্ড মেম্বার জসিম উদ্দিন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শেফা আক্তার। বিষয়টি বিকেলে সমাধানের কথা বলে কলেজ ছাত্রী শামীমা ও তার ছোট ভাইদের ঘর থেকে বের করে পুনরায় তালাবদ্ধ করে দেয় পুলিশ ও স্থানীয় দুই ওয়ার্ড মেম্বার লিটন মিয়া ও জসিম উদ্দিন। এ ঘটনায় পুটিজুরী এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হলে ঘরের তালা কোলে দেয়ার জন্য ওয়ার্ড মেম্বার লিটন মিয়া ও জসিম উদ্দিনের কাছে চাবি দেয় পুটিজুরী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএস আই ওয়াসিম। কিন্তু ওয়ার্ড মেম্বার লিটন মিয়া ও জসিম উদ্দিন ঘরের তালা না কোলে চেয়ারম্যানের দোহাই দিয়ে চাবিটি তাদের হাতেই রেখে দেয়। এদিকে কলেজ ছাত্রী ছোট ভাইকে নিয়ে কোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। এ ঘটনায় পুটিজুরী এলাকায় আলোচনা, সমালোচনা ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কলেজ ছাত্রী শামীমা ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নির্যাতিত পরিবারটি সু-বিচারের দাবীতে বার বার স্থানীয় মুরুব্বি ও থানা পুলিশের দারস্থ হয়েও বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমানে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ভুক্তভোগীরা বিষয়টি সমাধান ও নিরাপত্তার জন্য ৯৯৯ এ ফোন দিলে এস আই অলি উল্লাহ,র নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার দোহাই পেয়ে ফিরে যায় তারা।
এ ব্যাপারে এ এস আই ওয়াসিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য ঘরটি তালাবদ্ধ করা হয়েছিল, তালাটি খুলে দেয়ার জন্য ওয়ার্ড মেম্বার লিটন মিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ওয়ার্ড মেম্বার লিটন মিয়া বলেন, আফতাব উদ্দিন দুই সংসার তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ, বিষয়টি সমাধার জন্য আগামী ২৩ জুলাই শনিবার সন্ধ্যার পুটিজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এক বিচার শালিসের আহ্বান করেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর