,

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ'র সাথে আলাপচারিতায় প্রতিবেদক মনসুর আহমেদ।

বাহারি ফুল ও ফলগাছ লাগিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হয়েছে জেলা শিক্ষা অফিসের ছাদবাগান

মনসুর আহমেদ : নান্দনিক সৌন্দর্যের রূপ-লাবণ্য সবুজ। ইট-পাথরের শহুরে নাগরিক জীবন থেকে দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। কিন্তু মানুষ তার শিকড়কে সহজে ভুলতে পারে না। সবুজে ভরা গ্রাম বাংলায় বেড়ে ওঠা নাগরিক সমাজের একটা অংশ সবুজকে ধরে রাখতে চায় আবাসস্থলে। শৌখিন মানুষ তাদের ঘরবাড়িতে সবুজকে ধরে রাখার জন্য একান্ত নিজস্ব ভাবনা আর প্রচেষ্টায় বাড়ির ছাদে তৈরি করছে বাগান। সময়ের সঙ্গে এ বাগান এখন আর শৌখিনতার মধ্যে নেই। একটু সবুজের ছোঁয়া পেতে শহরবাসী এখন তাদের ছাদটি সাজাচ্ছেন বিভিন্ন গাছ দিয়ে। নিজের বাড়ির উঠোন কিংবা ছাদে ফল-ফলাদি চাষ করার ব্যাপারে অনেকেই এখন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এর প্রয়োজনীয়তা কম-বেশি সবাই মনে করছেন। হবিগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসটির ছাদের দৈর্ঘ্য মাত্র ২২ শ’ত স্কয়ার ফিট। মাত্র ২২শ স্কয়ার ফিটের এ ছাদে ১২০ প্রজাতির প্রায় ৩ শত গাছ লাগিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বাগান। যা নজর কেড়েছে শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের। সারি সারি টবে লাগানো এসব গাছ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি ছাদের বাতাসেও যেন বইছে এক অন্যরকম অনুভূতি। শিক্ষা অফিসের এই ছাদ বাগানে যেমন রয়েছে ফুল ফলের ছাড়া তেমনি রয়েছে ঔষধীসহ ভেষজ গাছের ছাড়া। আর দীর্ঘদিন যাবত এ ছাদ বাগানটি যিনি পরিচর্যা করে গড়ে তোলেছেন তিনি হলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হবিগঞ্জের ৩ কোনা পুকুরপাড় এলাকায় অবস্থিত জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ছাদ বাগানে ফুল, ফল, শাক-সবজি, ওষুধি গাছ রয়েছে। গাছে ঝুলে আছে ৪০-৫০টি মাল্টা। বিদেশি ড্রাগন ফলও আছে। আরও ঝুলে আছে বিভিন্ন জাতের পেয়ারা, আতাফল, লেবু, বাউকুল, জামরুল। ফল গাছের মধ্যে আরও রয়েছে ত্বীন, কাউফল, আমগাছ, আমড়া, থাই তেঁতুল, জামগাছ, মাল্টা, আংগুর, কমলালেবু, ডালিম, ড্রাগন, পেঁপে, নারিকেল, জয়ফল, বরই। এছাড়া ফুলের মধ্যে রয়েছে গোলাপ, জবা, নাইটকুইন, থাইপাতা, রজনীগন্ধ্যা, বেলিসহ আরও বিভিন্ন প্রজাতির ফুল। শাক-সবজির মধ্যে কাঁচামরিচ, বেগুন, পুঁইশাক, টমেটো, ধুন্দল, করলা, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা দেখা গেল। ওষুধি গাছের মধ্যে রয়েছে নিমগাছ, তুলসী গাছ, ঘৃতকুমারী। এছাড়া মেহেদী গাছ, পাথরকুচিসহ আরও ছোট ছোট অনেক উদ্ভিদও রয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ আলাপচারিতায় বলেন, “এই ছাদ বাগনটি করতে আমরা উদ্বুদ্ধ হয়েছি সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের মাধ্যমে। তিনি হবিগঞ্জ এসে সকল দপ্তর প্রধানকে ছাদ বাগান করতে নির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাদ বাগান গড়ে তোলার জন্য। হবিগঞ্জ জেলায় ২৭৮টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এই প্রতিষ্ঠান গুলোতে আমরা বাগান গড়ে তোলবো। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন জানতে পারে কিভাবে গাছের পরিচর্যা করে ফুল ও ফল ফুঠাতে হয়। ইতিমধ্যে জেলার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাগান গড়ে উঠেছে। পাশাপাশি আমরা আমাদের ছাদ বাগান থেকে গাছের চারা ও কলম শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করে এই ধরনের বাগান করতে উৎসাহিত করি। এতে আগামীদিন খাদ্যের নিরাপত্তা তৈরি হবে। আর একটি খুশীর সংবাদ হলো আমাদের ছাদ বাগানটি বিভাগের মধ্যে শতভাগ নম্বর পেয়ে সেরা নির্বাচিত হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর