,

শহরের পুরান মুন্সেফী এলাকায় পুকুর দখলের মহোৎসব

জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন খোয়াই নদী দখলের পর পুরান মুন্সেফী এলাকার আরডি হল সংলগ্ন পুকুরটি দখলের মহোৎসব চলছে। এতে একদিকে ঐতিহ্যবাহী পুকুরটির চারপাশ দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে অন্যদিকে পুকুরের চারপাশ ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। জানা যায়, বহু বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি শহরের পুরান মুন্সেফী এলাকার সিনেমাহল, শ্যামলী, গোসাইপুরসহ আশপাশের এলাকার শত শত লোক প্রতিদিন গোসল করেন। আবার পুকুরের পানি সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অনেকে নানা কাজে ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমানে পুকুরের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অবৈধ ভবনগুলোর ময়লা আর্বজনার স্তুপ পুকুরে ফেলার কারণে পানি নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া পুকুরের পশ্চিম পাশে জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন। গতকাল সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, অচিরেই যদি ঐতিহ্যবাহী পুরান মুন্সেফী সংলগ্ন পুকুরটি দখলদারের কবল থেকে উদ্ধার না করা হয় তবে সময়ের সাথে সাথে দখলদারের কবলে চলে যাবে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান মুরাদ অভিযান চালিয়ে মাষ্টার কোয়ার্টার, চন্দ্রনাথ সরকারি পুকুর, পুরান মুন্সেফী এলাকার পুকুরসহ বিভিন্ন পুকুর এ ছাড়া মাছুলিয়া ডায়াবেটিক হাসপাতাল থেকে শুরু করে অনন্তপুর, শ্যামলী, পুরান মুন্সেফী, হরিপুর, স্টাফ কোয়ার্টার, সিনেমা হল, মুসলিম কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন এলাকায় পুরাতন খোয়াই নদীর ওপর ভবন উচ্ছেদ করেন। তখন তাকে রহস্যজনক কারণে বদলী করা হয়। তিনি চলে যাওয়ার পর এসব উচ্ছেদকৃত জায়গায় আবারও প্রভাবশালীরা বাসা নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যদি এখনই এসব অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধার না করায় তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। যেমন অবৈধ দখলদারের কারণে ঠিকমতো টিউবওয়েলের পানি উঠছে না। পানি নিষ্কাষনের রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই বিভিন্ন রাস্তাঘাটে হাটু থেকে কোমড়পানি পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে করে রাস্তা ভেঙ্গে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। যার ফলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাস্তা মেরামতের ১ বছরের মাথায়ই পানি জমে থাকার কারণে ভেঙ্গে যায়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তোফাজ্জল সোহেল জানান, দীর্ঘদিন ধরে পুরাতন খোয়াই নদী দখলদারের কবল থেকে উদ্ধারের জন্য তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আন্দোলনের ফলে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ করলেও আবারও তারা দখল করে নিচ্ছেন। করোনাকালীন সময়ে তাদের আন্দোলন বন্ধ ছিলো। আবারও তারা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এ ছাড়া এসব অবৈধ দখলের ফলে পরিবেশ বিপর্যস্ত হচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর