,

ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে

জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। অফিসের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারির যোগ সাজেসে অফিসের আনসার ও দালাল সদস্য দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা। এর ফলে শত শত মানুষ বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধার শিকার হচ্ছে। অফিসটি এখন দালালসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও রাজনৈতিক প্রভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অপর দিকে কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বাহিরে দালালচক্রের দৌরত্ব চরমে পৌঁছেছে। পাসপোর্ট অফিসে দায়িত্বরতরা কৌশলে দালালির সাথে জড়িত বলেও অভিযোগ সেবাপ্রার্থীদের। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি ঘিরে রয়েছে কম্পিউটার দোকান ও এজেন্ট ব্যাংকিং। এসব যায়গায় ফরম পূরণের আড়ালে চলছে রমরমা পাসপোর্ট দালালি। যদিও সব কিছু জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস কর্তৃপক্ষ। হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দালালদের হাত ধরে যে সকল গ্রাহক এসেছে তাদের আবেদন ফরমে বিভিন্ন স্থানে ‘বিশেষ চিহ্ন’ দিয়ে দেওয়া হয়। তাদের ফরম যাচাইয়ে কাউন্টারে শুধু চিহ্ন দেখা হয়। যে সকল ফরমে চিহ্ন থাকে সেই সকল ফরম গ্রহণ করে পাসপোর্ট অফিসে। চিহ্নবিহীন ফরম বিভিন্ন কৌশলে ফেরত পাঠানো হয়। পরবর্তীতে দালালের হাত ধরে আসলেই সকল সমস্যার সমাধান হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভুগীদের। পাসপোর্ট করতে আসা কয়েকজন ব্যক্তির অভিযোগ, দশদিন অফিসে ঘুরেও পাসপোর্ট করতে পারেন না তারা। ডিসি অফিস ও ইউএনও অফিস ও পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ দিয়ে কোনো সমাধান পায়ননি। পড়ে বাধ্য হয়ে দালালের মাধ্যমে পাসপোর্টের কাগজ জমা ও ফিঙ্গার দিতে হয়। তারা আরও জানান, কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে তাদের। তাই এসব দুর্নীতিবাজ কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের বিচার চান অনেকে। জানা যায়, হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে ২ শতাধিক ফাইল জমা হয়। এর মধ্যে দালালের মাধ্যম ছাড়া ফাইল জমা দেওয়া হলে হয়রানির শিকার হতে হয় সেবাপ্রার্থীকে। প্রতিটি ফাইলে দালালকে দিতে হয় ২ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এভাবেই লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয় এই আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ঘিরে। অফিসটির কাউন্টার থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপেই ভোগান্তি পিছু ছাড়ে না সেবাপ্রার্থীর। দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়েও ফাইল জমা না দিয়ে ফিরতে হয় অনেককে। এমন হয়রানির ঘটনা পাসপোর্ট অফিসে অহরহ চলছে জেনেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অথচ পাসপোর্ট অফিসের পাশেই দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সুপার কার্যালয়। এসব থাকার পরও কতিপয় কর্মচারীরা বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ইচ্ছামতে লোকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।

 


     এই বিভাগের আরো খবর