,

ইসলামের প্রথম সামরিক অভিযান

সময় ডেস্ক : মক্কার মুসলিমরা মদিনায় হিজরত করার পর যখন একটি শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলে এবং স্থিতিশীল জীবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন মক্কার মুশরিকরা নানাভাবে মুসলিমদের প্রতিহত করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়। যা শুরু হয়েছিল মুসলিমদের বিরুদ্ধে মদিনার ইহুদি ও মুনাফিক সম্প্রদায়কে উসকে দেওয়া, মুসলিমদের বের করে দিতে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ ইত্যাদির মাধ্যমে এবং পরবর্তী সময়ে তার সঙ্গে যুক্ত হয় লুটতারাজ, ছিনতাই, হত্যা, অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদি অপরাধ। তাদের এসব অপরাধ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না; বরং তারা তা করত সংঘবদ্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে। (ড. রাগিব সারজানি, আস-সিরাহ আন-নাবাবিয়্যাহ, পৃষ্ঠা ৪০৬)
মক্কার মুশরিকদের এসব অত্যাচার ক্রমেই বাড়ছিল। ফলে ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়, যা অনিবার্যভাবে মুসলিমদের সামরিক প্রস্তুতির দিকে ঠেলে দেয়। ভবিষ্যৎ সামরিক সংঘাতের হাত থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) প্রস্তুতি হিসেবে মদিনার আশপাশে ছোট ছোট সামরিক অভিযান প্রেরণ করতে শুরু করেন। বদর যুদ্ধের আগে পরিচালিত এসব অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল কুরাইশের লুটতারাজ বন্ধ করা, মদিনার অদূরে শামের বাণিজ্য পথে বাধা সৃষ্টি করে মক্কাবাসীর মনে ভয় সৃষ্টি করা, কুরাইশের গতিবিধির ওপর নজর রাখা, নবীন ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিকদের সামরিক অভিযানে অভ্যস্ত করা এবং মদিনার আশপাশের গোত্রগুলোকে ইসলামী রাষ্ট্রের পক্ষে সুসংহত করা। (ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবি, আস-সিরাহ আন-নাবাবিয়্যাহ, পৃষ্ঠা ৩৭৩)
এই ধারাবাহিকতায় প্রথম অভিযান ছিল ‘সারিয়ায়ে সাইফুল বাহার’। হিজরতের সপ্তম মাস রমজানে (রবিউল আউয়ালে) হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে ৩০ জন মুহাজির সাহাবি অংশগ্রহণ করেন। আবু জাহালের নেতৃত্বাধীন একটি বাণিজ্য কাফেলা ছিল তাদের লক্ষ্য। কাফেলায় তিন শ লোক ছিল এবং তারা শাম থেকে ফিরছিল। উভয়পক্ষ যুদ্ধের জন্য সারিবদ্ধ হয়। কিন্তু মাজদি ইবনে আমর জুহানির উদ্যোগের কারণে সংঘাত এড়ানো সম্ভব হয়। এরপর মুশরিকরা মক্কায় এবং মুসলিমরা মদিনায় চলে যায়। (সিরাতে মোস্তফা ২/৪৬; মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস ২/৪৭)


     এই বিভাগের আরো খবর