,

হবিগঞ্জ শহরে দীর্ঘদীন ধরে চলছে রেবন অপটিক্যাল এন্ড ওয়াচ’র অভিনব প্রতারণা :: ’মেমো লাগবোনা আজীবন চলবে, নষ্ঠ হলে আমি আছি তো’ ফেরত নিয়ে গেলে- ’এটা আমাদের দোকানের প্রোডাক্ট না’

নামীদামী ব্রান্ডের নাম ধরে বিক্রি করে নিম্নমানের পন্য

জাবেদ তালুকদার : দীর্ঘদীন ধরে অভিনব কায়দায় সহজ-সরল গ্রাহকরে সাথে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে যাচ্ছে হবিগঞ্জ শহরের তিনকোনা পুকুর পাড়ে অবস্থিত ’রেবন অপটিক্যাল এন্ড ওয়াচ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
খোজঁ নিয়ে জানা যায়- কাস্টমার বুঝে বিভিন্ন ভালো মানের প্যাকেটে মোড়ানে পণ্য দেখায় তারা, নামীদামী ব্রান্ডের স্টিকার লাগানো এসব পণ্যের অধিকাংশই হয় নিম্নমানের আর না হয় পুরোপুরো অকেজো, কাস্টমারদের ভাল পণ্য দেখিয়ে অন্য প্যাকেট করে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে দোকানটির বিরুদ্ধে। কেউ মেমো চাইলে মেমো না দিয়ে বলে ’আরে ভাই যান মেমো লাগবোনা এই জিনিসে আপনার পুরো জীবন চলবে’ কিন্তু পণ্য নিয়ে এসে প্যাকেট খুলেই দেখা যায় হয় যেটা দেখানো সেটা নয় অন্য পণ্য আর না হয় অকেজো অথবা কিনে আনার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফেরত নিয়ে আসলে বলে এটা আমাদের দোকানের পণ্য না, আমাদের দোকানের হলে মেমো দেখান। তারা মেমো না দেয়ায় ভূক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন, কেউ প্রতিবাদের ভাষায় কথা বললে অথবা মুখ খুললে তাদেরকে মারমুখী আচরণ করে তাড়িয়ে দেয় প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে থাকা লোকজন।
’রেবন অপটিক্যাল এন্ড ওয়াচ’ এর প্রতারণার শিকার হবিগঞ্জ শহরের সদরুল নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র বলেন- ’গত মাসের আনুমানিক ২৭-২৮ সেপ্টেম্বর ভালো দোকান ভেবে এই দোকান থেকে আমার বন্ধুকে নিয়ে একটি ঘড়ি নিছিলাম, বলেছিলাম ভালো মানের ঘড়ি দেখাতে কিন্তু তারা নামীদামী ব্রান্ডের মোড়কে একদম নিম্নমানের একটি পণ্য দেয়, এবং বলে খুব ভাল পণ্য ১ বছরের ওয়ারান্টি আছে। এই ঘড়িটি দেয়ার কথা থাকলেও তারা প্যাকেট করার সময় একদম নিম্নমানের একটি ঘড়ি দেয়, প্যাকেট খুলে দেখা যায় ঘড়িটি পুরোপুরি অকেজো। ঘড়ি নেওয়ার সময় একাধিকবার মেমো চাওয়া সত্ত্বেও তারা মেমো দেয়নাই, বললো ভাই আপনারে চিনি নষ্ট হলে নিয়া আইসেন, সারাজীবনের গ্যারান্টি। ২দিন পর তা ফেরত নিয়ে আসলে তারা বলে এটা তার দোকানের জিনিস না। মেমো দেখাতে হবে, আমি বললাম আমার ফ্রেন্ড সাথে ছিল তার সামনে ঘড়ি নিলাম, আপনি মেমো দেন নাই। সে কোনভাবেই মানতে রাজি না এটা তার দোকানের ঘড়ি। পরে আমার ফ্রেন্ড অন্য মাধ্যমে কঠোর হওয়ায় বাধ্য হয়ে ঘড়িটি ঠিক করে দেয় তাও ১ ঘন্টা পর নষ্ঠ হয়ে যায়। দেখলাম আমার সামনে আরো কয়েকজন একই অভিযোগ নিয়া আসলো।’
একই কায়দায় তাদের প্রতারণার শিকার পাভেল নামে এক যুবক বলেন- প্রায় ২ বছর আগে তাদের দোকান থেকে একটি ঘড়ি কিনি, তারা ১ বছরের ওয়ারেন্টি দেয়, আমার সাথে আমার বন্ধু ছিল সে তাদের পরিচিত। মেমো চাইলে তারা বললো ’সমস্যা হলে নিয়ে আইসেন’ ১৫ দিন পর নষ্ট হয়ে গেলে তারা বলে এটা আমাদের দোকানের ঘড়ি না, আমাদের দোকানের হলে মেমো দেখান’ পরে আমার বন্ধু গেলেও তারা অপমান করে তাড়িয়ে দেয়।
শান্তা নামে এক কলেজ ছাত্রী জানান- ওদের সার্ভিস খুবই বাজে এবং জিনিসের দাম আর জিনিসের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে। এমনকি তারা নিজের দোকানের জিনিস পাল্টে দেওয়া তো দূরের কথা চিনতেই অস্বীকার করে।
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- এ বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর