,

নবীগঞ্জে মসজিদে মোতাওয়াল্লীর দায়িত্ব না দিয়ে অভিযোগ দায়ের :: অভিযোগটি সম্পূর্ন ভিত্তিহীন –ইউএনও

স্টাফ রিপোর্টার : নবীগঞ্জ উপজেলার শতবর্ষী ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের নাম জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ছালেহা জামে মসজিদ নামকরণ করে অবৈধ কমিটি গঠন করে মসজিদের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় ওয়াকফ এষ্টেট কর্তৃক নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করলে নির্বাহী কর্মকর্তা মসজিদ কমিটিকে ওয়াকফ অধ্যাদেশ ১৯৬২ এর ৪৪ ধারা মোতাবেক ৩ বছর মেয়াদে অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য গত ০১ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য্য করে বর্তমান কমিটির সভাপতি/সেক্রেটারী ও কোষাধ্যক্ষকে নোটিশ দিলে বর্তমান কমিটি দায়িত্ব না সমজিয়ে উল্টো উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ফলে স্থানীয় লোকজন ও মুসল্লিদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, উপজেলার শতবর্ষী ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের নাম পরিবর্তন করে ছালেহা জামে মসজিদ নামকরণ ও অবৈধ কমিটি গঠন করলে মসজিদের ভূমি দাতা পরিবারের সদস্য সাংবাদিক আশাহীদ আলী আশা মসজিদের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগসহ বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে ঢাকা ওয়াকফ প্রশাসক ও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। ইউএনও তদন্ত করে জেলা প্রশাসকের বরাবরে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয় মসজিদ কমিটির নিকট ২০১০ সালের পুর্বে কোন আয় ব্যয়ের হিসাব না থাকায় আর্থিক লেন দেনের বিষয়টি অস্পষ্ট থাকায় অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায় এবং দায়িত্ব পালনে কমিটির অদক্ষতা প্রমানিত হয়। এ বিষয়ে কমিটি পুণঃগঠনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক ঢাকা বরাবরে প্রেরণ করেছেন। এছাড়া ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ওয়াকফ প্রশাসনের পক্ষে তদন্তকালে দেখা যায়, অবৈধ মসজিদ কমিটি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজ তৈরী করে ১৭৭১০ নম্বর নথিতে ওয়াকফ প্রশাসনে ছালেহা জামে মসজিদ নামকরণ করেছেন। অথচ বর্তমানেও ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ হিসেবে সেটেলমেন্ট জরিপ ও সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে যা অবৈধ কমিটি গোপন রাখেন মর্মে তদন্তে প্রতিয়মান হয়। এক পর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার ওয়াকফ্ হিসাব নিরীক্ষক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যেহেতু মসজিদের গর্ভে সরকারী সম্পত্তি রয়েছে সেই সুবাধে এলাকার শান্তি শৃংখলার স্বার্থে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অথবা সহকারী কমিশনার (ভুমি)কে সভাপতি, সেক্রেটারী/মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করে ১১/১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেন। গত ০৫/০৬/২২খ্রী বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের আদেশের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নবীগঞ্জ হবিগঞ্জকে ৩ বছর মেয়াদে অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী নিযুক্ত করেন। এর পেক্ষিতে সালেহা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি রুপ উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক হাজী হেলিম উদ্দিন ও কোষাধ্যক্ষ কামাল চৌধুরীকে নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয় আগামী ০১/০৯/২০২২ইং তারিখে যাবতীয় দলিল/কাগজপত্র/আয় ব্যায়ের হিসাব বিবরণী রেজিস্ট্রার ও আনুষ্ঠানিক কাগজাদি বুঝাইয়া দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তারিখের ১ দিন আগে যৌথ স্বাক্ষরে সাধারণ সম্পাদক হেলিম ও কোষাধ্যক্ষ কামাল সময় প্রার্থনা করেন।
পরবর্তীতে নবনিযুক্ত অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী ৩ সপ্তাহ সময় দিয়ে ২১/০৯/২২ইং তারিখের নোটিশ প্রদান করেন। জারিকারক নোটিশ নিয়ে হেলিম উদ্দিন গংদের কাছে গেলে তার নোটিশ রাখেননি। আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন দপ্তরে সরকারি কর্মকর্তা ও ভুমিদাতা পরিবারের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র মূলক অভিযোগ দায়ের করে সময় ক্ষেপন করে মসজিদের টাকা আত্মসাতের পায়তারা করে যাচ্ছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, প্রায় ৩১ বছর যাবৎ ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদ নিয়ে কমিটির বিরুদ্ধে ভুমি দাতা পরিবারের সদস্য সাংবাদিক আশাহীদ আলী আশা এবং মুসল্লিদের মাঝে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মুরুব্বীয়ানসহ উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন একাধিকবার শালিস বিচার করলেও অবৈধ কমিটি কোন রায়ই না মানায় তা ভেস্তে যায়। বর্তমানে ওই মসজিদ নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দাঙ্গা হাঙ্গামা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান শাহরীয়ার বলেন অভিযোগ যে কেউ করতে পারে তবে অভিযোগটি সম্পূর্ন ভিত্তিহীন।
সালেহা জামে মসজিদ কমিটির সহ-সম্পাদক মোঃ আমিনুর রহমানের মোবাইল নং ০১৩২২-৬৭০৭৯৪ তে ফোন করিলে বার বার রিং করলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা গেল না।


     এই বিভাগের আরো খবর