,

‘নবীগঞ্জ উপজেলা তথ্য বাতায়নে তথ্য নেই’ সংবাদের প্রেক্ষিতে সহকারী প্রোগ্রামার কাজী মঈনুল হোসেনের ব্যাখ্যা

গত ১৭ অক্টোবর, ২০২২ইং দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকায় ‘তথ্য নেই’ নবীগঞ্জ উপজেলা তথ্য বাতায়নে, দায়সারাভাবে চলছে সরকারি ওয়েবসাইট, বিড়ম্বনায় জনসাধারণ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে সহকারী প্রোগ্রামার কাজী মঈনুল হোসেন ব্যাখ্যা উপস্থাপন করছি।
সংবাদটিতে উপজেলা তথ্য বাতায়নের উপজেলা প্রশাসনের পোর্টাল সহ আরো বিভিন্ন পোর্টালে তথ্য বিভ্রাটের বিষয়টি উল্লেখিত হয়েছে এবং বলা হয়েছে এই তথ্য হালানাগাদের তদারকির দায়িত্বে সহকারী প্রোগ্রামার। প্রকৃত অর্থে নবীগঞ্জে যতগুলি সরকারী দপ্তর রয়েছে, প্রতিটি সরকারী দপ্তরের নিজস্ব ওয়েব পোর্টাল রয়েছে এবং এই পোর্টালসমূহ হালনাগাদ করার দায়িত্ব স্ব স্ব দপ্তর প্রধানের। উপজেলা আইসিটি কার্যালয় এক্ষেত্রে তাদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে কারিগরি সহায়তা প্রদান করে থাকে। এছাড়া তাঁদের স্ব স্ব পোর্টাল পর্যবেক্ষণ পূর্বক উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভা এবং আইসিটি কমিটির সভায় নিয়মিত তাগিদ প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়া চলতি বছরের মে মাসে নবীগঞ্জ উপজেলায় ওয়েব পোর্টাল আপডেট করণ বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণও অনুষ্ঠিত হয়। এর পাশাপাশি জুন মাসের মাসিক সমন্বয় সভায় ওয়েব পোর্টাল আপডেট করার বিষয়ে অফিসের নাম উল্লেখ পূর্বক তাদেরকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের মাধ্যমে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দপ্তরসমূহ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি। এর পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ সমূহের ওয়েব পোর্টালসমূহ নিয়মিত হালনাগাদ করণের বিষয়ে উদ্যোক্তাদের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাগিদ প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বার তালিকা হালনাগাদ করার উদ্যোগ গ্রহণও করা হয়, কিন্তু কতিপয় ইউপিকে বারবার বলা সত্বেও তাঁরা বিষয়গুলিকে গুরুত্বের সাথে নেয় নি। সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে আমি তাদেরকে তাৎক্ষনিক পাসওয়ার্ড রিসেট সহ আরো নানা ধরণের সহায়তা প্রদান করে থাকি, এতদসত্বেও তাদের উদাসীনতার জন্য ওয়েব পোর্টাল সমূহ যথাযথভাবে হালনাগাদ হয় না। কেউ যদি নিতান্তই পোর্টাল হালনাগাদে অসমর্থ হয় বা কারিগরি জ্ঞান সীমাবদ্ধ থাকে, সেক্ষেত্রে তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ আমি অফিসিয়াল কিংবা ব্যক্তিগতভাবেও দিয়ে থাকি। এর পাশাপাশি চলতি বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে উপজেলার সিংহভাগ দপ্তরের দপ্তর প্রধান সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হালনাগাদ করা হয় এবং এই কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে তাদেরকে দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়। আমার কাছে পোর্টাল তথ্য হালনাগাদ সংক্রান্ত কোনো তথ্য চেয়ে কিংবা সহায়তা চেয়ে পায় নি এমন নজির এখন পর্যন্ত আমার জানা মতে নেই।
এর পাশাপাশি সংবাদটিতে উপজেলা প্রশাসন সাইটে কর্মকর্তা অপশনটির কথা বলা হয়েছে যেখানে ক্লিক করলে শুধুমাত্র বর্তমান ইউএনও মহোদয়ের নাম ব্যতীত অন্য কোনো কর্মকর্তার নাম প্রদর্শিত হচ্ছে, যেটি সঠিক। অন্য কর্মকর্তাদের তথ্য দেখতে চাইলে অন্য দপ্তরের ওয়েব পোর্টালে প্রবেশপূর্বক সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তার নাম দেখতে পাবে। ওয়েব পোর্টালের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এটি সঠিক আছে, কিন্তু সংবাদে বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে এক নজরে ক্যাটাগরির প্রায় সকল তথ্যই দেওয়া আছে, কিন্তু কিছু তথ্য হালানাগদ নয় বলে সংবাদে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই আপডেট তথ্যের তালিকা ইতোপূর্বেও কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে কিন্তু তথ্য না পাওয়ায় সেটি আপডেট করা হয় নি। এক্ষেত্রে বস্তনিষ্ঠ তথ্য ব্যতীত মনগড়া তথ্য দিয়ে পোর্টাল আপডেট করা অনুচিত। কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হালনাগাদ তথ্য এবং পরিসংখ্যান সীমা সংক্রান্ত তথ্য যথাসময়ে দেওয়ার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের, যেটা তাঁরা করে নি।
এর পাশাপাশি উপজেলা ভূমি অফিস সহ আরো অন্যান্য কিছু অফিসের পোর্টালে তথ্য বিভ্রাটের বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে, যার দায়ভার আমার উপর অর্পিত হয়েছে, সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের কার্যপরিধি মোতাবেক একজন সহকারী প্রোগ্রামার সকল দপ্তরের তথ্য নিজে হালনাগাদ করার জন্য রেস্পন্সিবল নয়, এটা স্ব স্ব দপ্তরের নিজস্ব দায়িত্ব এবং কোনো কারিগরি সহায়তার জন্য সহকারী প্রোগ্রামার এর শরণাপন্ন হতে পারে, এক্ষেত্রে সহকারী প্রোগ্রামার তাঁদের সাহায্য করবে, যেটা আমি নিয়মিত করে থাকি।
এর পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে যে, সহকারী প্রোগ্রামার অফিসে আসেন সকাল ১১:০০টায় এবং নিয়মিত অফিস করেন না। যা সম্পূর্ণ অসত্য। যোগদানের পর থেকে আমি নিয়মিত সময় অনুযায়ী অফিসে আসি, কিন্তু সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে নবীগঞ্জের পাশাপাশি আমি বানিয়াচং, আজমিরিগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ সদর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে। সেই সূত্রে উক্ত উপজেলাগুলোতেও আমার দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতি সপ্তাহে দুদিন যেতে হয়, সে কারণে নবীগঞ্জে পুরোটা সপ্তাহ অফিস করা সম্ভবপর হয় না। অফিসে আসা কিংবা দায়িত্ব পালনের বিষয়ে আমি কখনোই উদাসীন নই। যোগদানের পর থেকেই নবীগঞ্জ উপজেলার আইসিটি সংক্রান্ত অগ্রগতি ত্বরান্বিত করণে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি এবং আমার দপ্তর থেকে কোনো সেবা প্রাপ্তিতে এখন পর্যন্ত কোনো মানুষ সেবা পায় নি বা ভোগান্তির শিকার হয়েছে এমন কোনো অভিযোগ আমার জানামতে উত্থাপিত হয় নি। নবীগঞ্জ উপজেলার পুরাতন ১৪টি এবং নতুন ০৫টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব নিয়মিত পরিদর্শনের পাশাপাশি তাদেরকে বিভিন্ন অনলাইন এক্টিভিটিতে সক্রিয় অংশগ্রহনের জন্য সার্বক্ষনিক সহযোগিতা আমি আমার দপ্তর হতে করে যাচ্ছি, যার ফলশ্রæতিতে শেখ রাসেল অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২২ এ নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে হবিগঞ্জ জেলার ভিতর সর্বোচ্ছ সংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদন করেছে, যা পুরো সিলেট বিভাগের ৩৯টি উপজেলার মধ্যে ৪র্থ সর্বোচ্ছ। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত বর্ণাঢ্যভাবে শেখ রাসেল দিবস-২০২২ উদযাপিত হয়েছে। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সুরক্ষা অ্যাপে টীকা নিবন্ধন কার্যক্রম সংক্রান্ত যাবতীয় পরামর্শ আমি আমার দপ্তর থেকে প্রদান করে থাকি। এছাড়াও আইসিটি সংক্রান্ত যে কোনো পরামর্শ, সহযোগিতা আমি আমার দপ্তর থেকে সাধারণ নাগরিক কিংবা সরকারি দপ্তর কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত প্রদান করে আসছি। ই-নথি বাস্তবায়নে সরকারি দপ্তরসমূহকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান এবং কারিগরি সহায়তা আমি প্রদান করে আসছি। সুতরাং দায়সারা ভাবে দায়িত্ব পালনের যে অভিযোগের কথা সংবাদটিতে এসেছে, সেটি পুরোপুরি অসত্য এবং অনাকাংক্ষিত।

কাজী মঈনুল হোসেন
সহকারী প্রোগ্রামার
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।


     এই বিভাগের আরো খবর