,

নবীগঞ্জে প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে মসজিদের নাম পরিবর্তন :: আরজান আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোটার : নবীগঞ্জ প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে মসজিদের নাম পরিবর্তন করে নিয়েছেন আরজান আলী নামের এক ব্যক্তি। গতকাল শনিবার হবিগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযোগ করেন জমি দাতার ছেলে আশাহিদ আলী আশার। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক আশাহীদ আলী আশা তার লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনা করেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ্য করেন যে, নবীগঞ্জের ঐতিহ্য বাহী ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের নাম মরহুম আলহাজ্ব আরজান আলী ভুল তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের তালিকায় জালিয়াতির মাধ্যমে ছালেহা জামে মসজিদ নাম করার অভিযোগ। মসজিদের নাম পরিবর্তন দেখে আমার পিতা তিলে তিলে কষ্ট যন্ত্রণা নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। ১৯৯৩/১৯৯৪ইং সালে নবীগঞ্জ উপজেলার শতবর্ষী ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের পরিবর্তে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ছালেহা জামে মসজিদ নাম করণ করে অবৈধ কমিটি গঠন করে মসজিদের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হয়েছে। উপজেলার শতবর্ষী ইনাতগঞ্জ বাজার জামে মসজিদের ভুমি দাতা পরিবারের সদস্য সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশা ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের ভুয়া কাগজ দিয়ে নাম পরিবর্তন করে ছালেহা জামে মসজিদ নামকরণ, অবৈধ কমিটি গঠন করে মসজিদের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগ ঢাকা ওয়াকফ প্রশাসক ও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। ইউএনও তদন্ত করে জেলা প্রশাসকের বরাবরে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয় মসজিদ কমিটির নিকট ২০১০ সালের পুর্বে কোন আয় ব্যয়ের হিসাব না থাকায় আর্থিক লেন দেনের বিষয়টি অস্পষ্ট থাকায় অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায় এবং দায়িত্ব পালনে কমিটির অদক্ষতা প্রমানিত হয়। এ বিষয়ে কমিটি পুণঃগঠনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক ঢাকা বরাবরে প্রেরণ করেছেন। এছাড়া, ২০০৯ইং সালে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় শর্ত সাপেক্ষে মামলা আপোষ নিমাংশা করা হয় কিন্তু আমিনুর গংরা মানেনি।
ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদের
২০১৮ইং সালে নবীগঞ্জ থানার ইনচার্জ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানে মধ্যস্থতায় ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাড়িতে বসে হাজার মানুষের সামনে নবীগঞ্জ উপজেলার বিশিষ্ট বিচারক বোডের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে দেন। কিন্তু আমিনুর গংরা মানেনি।
২০২০ইং সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে নবীগঞ্জ থানার ইনচার্জ ও উপজেলা সহকারী কমিশনার সহ সাংবাদিক সুশীল সমাজ সামাজিক ভাবে সমাধান করে দেন। কিন্তু আমিনুর গংরা মানেনি। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদন্তে আর্থিক লেনদেনের প্রাথমিক সত্যতা পায়। এ বিষয়ে কমিটি পুণঃগঠনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবারো আদেশ দেন।
গত ০৫/০৬/২২খ্রী বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের আদেশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নবীগঞ্জ হবিগঞ্জকে ৩ বছর মেয়াদে অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী নিযুক্ত করেন। এর পেক্ষিতে সালেহা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি রুপ উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক হাজী হেলিম উদ্দিন ও কোষাধ্যক্ষ কামাল চৌধুরীকে নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয়েছে আগামী ০১/০৯/২০২২ ইং তারিখে যাবতীয় দলিল/কাগজপত্র/আয় ব্যায়ের হিসাব বিবরণী রেজিস্ট্রার ও আনুষ্ঠানিক কাগজাদি বুজাইয়া দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তারিখের ১ দিন আগে যৌথ স্বাক্ষরে সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ সময় প্রার্থনা করেন। পরবর্তীতে নবনিযুক্ত অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী ৩ সপ্তাহ সময় দিয়ে ২১/০৯/২২ইং তারিখ নোটিশ নিয়ে গেলে নোটিশ রাখেনি। আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন দপ্তরে প্রশাসন সহ ভুমিদাতা পরিবারের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র মূলক অভিযোগ দায়ের করে সময় ক্যাপন করে মসজিদের টাকা আত্মসাত অব্যাহত রয়েছে।
দীর্ঘ ৩১ বছর যাবৎ ইনাতগঞ্জ জামে মসজিদ নিয়ে অবৈধ কমিটির আমিনুর গংরা ক্ষমতা দেখিয়ে যা ইচ্ছে তাই করছে। আমিনুর রহমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি মরহুম আরজান আলীর আত্বীয় পরিচয় দিয়ে ভুমি দাতা পরিবারের উপর জুলুম অত্যাচার করছেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত হয়। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মুরুব্বীয়ানসহ উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন একাধিকবার শালিস বিচার করলেও অবৈধ কমিটি কোন রায়ই না মানায় তা ভেস্তে যায়। বর্তমানে ওই মসজিদ নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দাঙ্গা হাঙ্গামা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর