,

কাগজের ঠোঙায় পরিবেশন হচ্ছে মুখরোচক বিভিন্ন খাবার

মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনার সময় এ বিষয়টা গুরুত্বের সাথে দেখা হয়, ফলে অনেকেই
প্রিন্টেড কাগজের বদলে সাদা কাগজ ব্যাবহার শুরু করেছে ॥ নিরাপদ খাদ্য অফিসার

জাবেদ তালুকদার ॥ হবিগঞ্জ জেলা সদরসহ জেলার প্রতিটি গ্রাম-গঞ্জেই মুখরোচক বিভিন্ন খাবার পরিবেশনে ব্যবহার করা হয় কাগজের ঠোঙা। বিশেষ করে স্কুল কলেজের সামনে ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের খাবার, এমনকি হোটেল-রেস্তোরাঁ কিংবা চায়ের দোকানেও বিভিন্ন খাবার পরিবেশনে ব্যবহার করা হয় পুরনো পত্রিকা, বই-খাতা। তাছাড়া বেকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও খাবার তৈরীতে বিভিন্ন প্রিন্টেড কাগজের ব্যবহার করছে। কাগজে মোড়ানো বা ঠোঙায় করে সিঙ্গারা, পুরি, ঝালমুড়ি, আচার ইত্যাদি খেয়ে অনেকেই অভ্যস্ত। বিক্রেতারাও অভ্যস্ত হয়ে গেছে পুরনো ছাপার (পত্রিকা, বই) কাগজে মুড়িয়ে বিভিন্ন খাবার বিক্রি করতে। তবে, যুগ যুগ ধরে কাগজে মুড়িয়ে খাবার পরিবেশন ও খাবার গ্রহণ করা কেউ হয়তো ভাবতেও পারেনি যে, কাগজে মোড়ানো ওই খাবারেই রয়েছে মৃত্যুর হাতছানি! এটা যে স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর, এ বিষয়ে কারও যেন খেয়ালই নেই।
সম্প্রতি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খবরের কাগজ, ছাপা কাগজ বা যে কোনো লিখিত কাগজে খাদ্য পরিবেশন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, খবরের কাগজ/ছাপা কাগজ/লিখিত কাগজ এ ব্যবহৃত কালিতে ক্ষতিকর রং, পিগমেন্ট ও প্রিজারভেটিভস থাকে। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়া পুরনো কাগজে রোগসৃষ্টিকারী অণুজীবও থাকে। খবরের কাগজ ছাপা কাগজ/লিখিত কাগজ এর ঠোঙায় বা উক্ত কাগজে মোড়ানো খাদ্য নিয়মিত খেলে- মানবদেহে ক্যানসার, হৃদরোগ ও কিডনীরোগসহ নানাবিধ রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
এ নিয়ে কথা হয় কাগজের মোড়কে খাবার বিক্রি করা বেশ কয়েকজন বিক্রেতার সাথে তাদের অধিকাংশই এটা জানেনই না যে, কাগজে মোড়ানো খাবারে রয়েছে মৃত্যুর হাতছানি! এটা স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। অনেকে আবার এ বিষয়কে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন। যারা জানেন তারাও বিষয়টি মানছেন না।
কাগজে মোড়ানো খাবার ক্রেতাদেরও একই অবস্থা, এ নিয়ে এক ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন ‘জানি এগুলো ক্ষতিকর, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এভাবেই নেই। শিশুরা পছন্দ করে।’
পরোটা বিক্রির ক্ষেত্রে বিক্রেতারা পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের পাশাপাশি প্রধানত খবরের কাগজ কেটে তা দিয়ে খাদ্যপণ্যটি মুড়িয়ে দেন। অনেক সময়ই দেখা যায় গরম পরোটায় কাগজের অর লেপ্টে গেছে। এ নিয়ে বিক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এভাবে বিক্রি করা ছাড়া আর তো কিছু করার নেই।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ শাকিব হোসাইন বলেন- বাংলাদেশ খাদ্য কর্তৃপক্ষের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা খাবারে প্রিন্টেড কাগজের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছি, এরই ধারাবহিকতায় আমরা যে সকল প্রতিষ্ঠানের মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করি সকল প্রতিষ্ঠানেই আমরা এ বিষয়টা খুব গুরুত্বের সাথে দেখি, তারা প্রিন্টেড কাগজ ব্যবহার বন্ধ করেছে কি না। এর ফলে অনেকেই প্রিন্টেড কাগজের বদলে সাদা কাগজ ব্যবহার শুরু করেছে। বিশেষ করে বেকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ কার্যক্রমটা জোড়ালোভাবে শুরু হয়েছে। ফুটপাত-ভ্রম্যমান দোকানগুলোতে এখনও অভিযান করা হয়নাই, এজন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি, আশা করি সামনে যেকোন খাবারেই প্রিন্টেড কাগজের বদলে সাদা কাগজের ব্যাবহার নিশ্চিত করতে পারবো।


     এই বিভাগের আরো খবর