,

হাইব্রিড ধানের বীজের কারণে ফসল নষ্ট হওয়ার অভিযোগে ভোক্তা অধিকারে মামলা খারিজ

স্টাফ রিপোর্টার : শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ সদর উপজেলা বাগুনীপাড়ার কৃষক সুমন তালুকদার সুপ্রীম সিড কোঃ লিঃ এর হাইব্রীড ধানের বীজ কিনে তিগ্রস্ত হয়েছেন মর্মে দায়ের করা অভিযোগ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খারিজ করে দিয়েছে। শুনানিতে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগ থেকে সুপ্রীম সীড কোঃ লিঃ কে অব্যহতি দেয়া হয়।
হবিগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের স্মারক নং ২১-১৪৪ এর সূত্র মতে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নিজামপুর ইউনিয়নে বাগুনীপাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ সুমন তালুকদার গত ২০২২ সালের আগষ্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন রোড এলাকায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মেসার্স ইকবাল ট্রেডার্স থেকে এ জেড ৭০০৬ জাতের হাইব্রীড ধানের বীজ ১৮ কেজি ক্রয় করেন যা বাংলাদেশের স্বনামধন্য বীজ কোম্পানি সুপ্রীম সীড বাজার জাত করে। কৃষক তার বাগুনীপাড়া এলাকায় কৃষি জমিতে বীজ বপন করেন। তার জমিতে ধানের থোর বের হচ্ছে না এবং বীজের মানগত বিষয় নিয়ে হবিগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর সহকারী পরিচালক দেবা নন্দ সিনহা বরাবরে গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ করেন।
অথচ ইতিপূর্বে সুমন তালুকদারের এই অভিযোগ পেয়ে সুপ্রীম সীড কোঃ লিঃ এর জোনাল ম্যানেজার কৃষিবিদ মশিউর রহমান গত ২৭ নভেম্বর তারিখে অভিযুক্ত কৃষকের জমি পরিদর্শন করেন। তিনি পরিদর্শনে দেখতে পান জমি একেবারেই শুকনো এবং ফাটা ধানের শিষ নুয়ে পরেছে কিন্তু সব ধান সমানভাবে বাড়েনি।
জমি পরিদর্শন কালে কৃষক সুমন তালুকদার জানান, তিনি আরবী মাসের ৮ মহরমে জমিতে বীজ বপন করেছেন। অর্থাৎ ৭ই আগষ্ট তারিখে বীজ বপন করেছেন এবং জমিতে ইউরিয়া সাব ছাড়া অন্য কোন সার তিনি দেন নাই। যেহেতু ধান ক্ষেতে কুশি বের হওয়া থেকে ধান শক্ত হওয়া পর্যন্ত পানি আবশ্যক, তাই কৃষিবিদ মশিউর রহমান তাকে দ্রুত পানি সেচ এবং সম্ভব হলে ‘ফোরা’ স্পে করতে বলেন।
তিনি আরও বলেন প্রায় সব কৃষকের এ জেড- ৭০০৬ ধানের জমির ধান কেটে ফেলেছে অথচ আপনার জমির ধান কাঁচা, আপনি মনে হয় দেরিতে ধান লাগিয়েছেন। দেরিতে ধান লাগানোর বিষয়টি কৃষক অস্বীকার করেন। পরবর্তিতে কৃষক সুমন তালুকদার কিছু কুচক্রী মহল লোকের প্ররোচনায় সুবিধা লাভের আশায় ভোক্তা অধিকারে সুপ্রীম সীড কোঃ লিঃ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। গত ২৯ ডিসেম্বর মাসে জেলা ভোক্তা অধিকার অফিস কক্ষে সকাল ১১টায় শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযোগকারী কৃষক সুমন তালুকদার, অভিযুক্ত সুপ্রীম সীড কোঃ এর পক্ষে কৃষিবিদ মশিউর রহমান ছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন দেবানন্দ সিনহা সহকারী পরিচালক (ভোক্তা অধিকার), হবিগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, শায়েস্তাগঞ্জের উপজেলা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ ইকবাল হোসেন, এ জেড ৭০০৬ এর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বায়ার ক্রোপ সায়েন্স এর কর্মকর্তা এ জেড ৭০০৬ আবাদকারী কয়েকজন কৃষক এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উভয় পরে যুক্তি উপ স্থাপন শেষে দেখা যায় কৃষক সুমন তালুকদার এর তথ্য মতে তিনি বীজ বপন করেছেন ৭ই আগস্ট মাসে। অথচ তার বীজ ক্রয়ের মেমো ১৬ আগস্ট তারিখের, তিনি জমিতে সার-সেচ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে না পারায় তিনি কাংখিত ফলন পাচ্ছেন না, যার জন্য সুপ্রীম সীড এর বাজার জাতকৃত বীজ এ জেড ৭০০৬ কোনভাবেই দায়ী নয়। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ ইকবাল হোসেনসহ উপস্থিত কৃষকগণ যারা এ জেড ৭০০৬ চাষ করেছিলেন তারা সকলেই ভাল ফলন পেয়েছে। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরে স্টেশন রোড এলাকায় “ইকবাল ট্রেডার্স” এর কাছ থেকে বীজ ক্রয় করা আরো প্রায় শতাধিক কৃষক কোন প্রকার মিথ্যা অভিযোগ করেনি। সুপ্রীম সীড কোঃ লিঃ এর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় হবিগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দেবা নন্দ সিনহা সুপ্রীম সীড কোঃ লিমিটেড কে অভিযোগ থেকে অব্যহতি দেন।


     এই বিভাগের আরো খবর