,

এক বছরে সিলেটে সড়কে ঝরলো ৩৩৭ প্রাণ :: হবিগঞ্জে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৪ জনের প্রাণহানি

বিশেষ প্রতিনিধি : সিলেটে এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৩৭ জন। একই সময়ে আহত হয়েছেন ৪৩৫ জন। সদ্য গত হওয়া ২০২২ সালের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর এক প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে এমন তথ্য। গতকাল বুধবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিসচা’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগীয় কমিটির সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মিশু।
প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, গত বছর সিলেট বিভাগে ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩৩৭ জন নিহত ও ৪৩৫ জন আহত হন। জেলাভিত্তিক দুর্ঘটনার তথ্য বলছে, সর্বোচ্চ ১৩৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট জেলায়। এসব দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন ২৪৮ জন।
এরপর হবিগঞ্জে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৩ জন নিহত ও ৯৬ জন আহত হয়েছেন। মৌলভীবাজারে ৪২টি দুর্ঘটনায় ৪৩ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হন।
এ ছাড়া সুনামগঞ্জে ২৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে গত বছর। এসব দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত ও ৬১ জন আহত হন। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে। এ মহাসড়কে সিলেট বিভাগের অংশে ৮৫টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১২২ জন, আহত হন ১৮৭ জন।
জহিরুল ইসলাম মিশু জানান, দেশের ১১টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকার তথ্য, অনুমেয় অনুজ্জ বা অপ্রকাশিত ঘটনা ও নিসচা’র শাখা সংগঠনগুলোর রিপোর্টের ভিত্তিতে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার যতো কারণ- নিসচা’র প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। তন্মধ্যে রয়েছে সড়কে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, টাস্কফোর্স কর্তৃক প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশমালা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং, বিরতি ছাড়া দীর্ঘসময় ধরে গাড়ি চালনা, সিটবেল্ট ব্যবহার না করা, চালকদের মাদকে আসক্তি, মহাসড়কে নির্মাণ ত্রুটি, শিশুদের উপযোগী আসন না থাকা, সড়ক-মহাসড়কের মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি, মোটরসাইকেল চালকদের মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার না করা, রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট বসানো।
এ ছাড়াও অশিক্ষিত ও অদক্ষ চালক, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়ন না হওয়াকে কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর বাইরে জেলা পর্যায়ে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত লোক সংখ্যা, অপর্যাপ্ত রাস্তা, মোটরসাইকেল ও রিকশার আলাদা লেন না থাকা, ব্যাটারিচালিত যান সড়ক-মহাসড়কে উঠে বেপরোয়া গতিতে চলা, পথচারীদের নিয়ম না মানার প্রবণতা, জেব্রাক্রসিং, ওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস ব্যবহার না করে যত্রতত্র পারাপার ও রাস্তা চলাচল এবং পারাপারের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারকে দায়ী করা হয়েছে।
নিসচা’র প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সাল থেকে ২০২২ সালে সিলেটের সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর