,

চা বাগানে পুড়ছে বন্য প্রাণী অনুমতি ছাড়াই কাটা হচ্ছে গাছ

স্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জের রশিদপুর বন বিটের আওতাধীন গির্জাঘর এলাকায় বনে আগুন দিয়েছে চা বাগান কর্তৃপক্ষ। এই আগুনে হনুমান, বিরল প্রজাতির কাঠবিড়ালিসহ বেশ কয়েকটি প্রাণী আগুনে পুড়ে গেছে। রেমা-কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়রাণ্যের পাশে প্রায় তিন হেক্টর জায়গার বনজ ফলদ ও ভেষজ গাছ কেটে সেখানে আগুন লাগানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, হাতিমারা চা বাগানের মালিকপক্ষ গত কয়েক দিনে গির্জাঘর এলাকা থেকে অন্তত ১৪৫টি গাছ কেটে নেয়। পরে তারা আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ছাড়াও চা গাছ রোপণের জন্য টিলা কেটে সমতল করা হচ্ছে। কেটে নেওয়া গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে আম, জাম, কাঠাল, তেঁতুল, বট, আমলকী, বহেরা, আউলা ইত্যাদি। গির্জাঘর এলাকার বাসিন্দা মর্গেট কাস্তা বলেন, ‘কেটে নেওয়া গাছগুলো শত বছরের পুরনো। এ গাছগুলোর ফল প্রাণীদের খাদ্য ছিল। ফলে লোকালয়ে এসে হামলা করছে বানরের দল।’
পরিবেশ-প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন মিতা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী রবি কান্তে বলেন, ‘হাতিমারা চা বাগান মায়া হরিণের পছন্দের জায়গা। এখানে থাকা আউলা নামে একটি গাছের ফল মায়া হরিণ খায়। এ প্রজাতির গাছগুলোও কেটে ফেলা হয়েছে। ১৪৫টি গাছ কেটে নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, শূকরসহ নানা প্রজাতির কয়েক শ প্রাণী আশ্রয় হারিয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি প্রাণী মারা গেছে।’ হাতিমারা চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. মঈন উদ্দিন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বন বিভাগের অনুমতি না নিয়ে এসব গাছ কাটা হচ্ছে। সিলেট বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার জাতীয় কমিটির সদস্য ও সিলেটের মেট্রোপলিট ইউনিভার্সিটির ভিসি ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, এভাবে বন্য প্রাণীর জীবন বিপন্ন করার অধিকার কারো নেই। এভাবে গাছ কাটার কারণে শুধু বন্য প্রাণীর ক্ষতি হয়নি, পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


     এই বিভাগের আরো খবর