,

রক্ষক থেকে ভক্ষক গনি মিয়া লন্ডনী মামলা দায়েরের পর বেরিয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য

মুজাহিদ আলম চৌধুরী ॥ নবীগঞ্জের আলোচিত লন্ডন প্রবাসী গনি মিয়া বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর বেরিয়ে আসছে একের পর এক নতুন তথ্য। সরেজমিনে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের বৈঠাখাল গ্রামের মৃত: ইছন মিয়ার পুত্র ইছরাক মিয়া লেবার বাউচার (বাউচার নং-০৭০৫৯৫) এর মাধ্যমে ১৯৬৩ ইং সালে লন্ডন যান। পরে ১৯৭০ইং সালে তিনি ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে নিবন্ধন পান। ১৯৭০ ইং সালের ইছরাক মিয়ার নামে ব্রিটিশ পাসপোর্ট (যার নং- এল৭৩৬৩২৪) প্রাপ্ত হয়ে ১৯৭৭ইং সালে তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। নিজ বাড়ীতে চুরি ডাকাতির ভয়ে ইছরাক মিয়া তার পাসপোর্ট ও ভিসা তার বংশীয় চাচা মৃত হুসমত উল্লার পুত্র আব্দুল গণি ওরফে গণি মিয়ার নিকট জমা রাখেন। এই সরলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে পাসপোর্টের ছবি ও নাম পরিবর্তন করে ইছরাক মিয়া ব্যবহার করে নানা অপ-কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে কয়েক মাসের মধ্যেই আব্দুল গণি ওরফে গণি মিয়া লন্ডনে পাড়ি জমায়। অনুসন্ধানী রিপোর্টে আরও জানা যায় যে, ১৯৫৬ইং সালের এস.এ রেকর্ড, ১৯৭৬, ১৯৮৩, ১৯৯৫ ইং সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী গনি মিয়া, পিতা- হাজি হুসমত উল্লা, সাং- বৈঠাখাল লিখা রয়েছে। এমনকি বর্তমান মাঠফর্সায় ও তার নিজ বাড়ির কনজুমার মিটার এবং হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির ভোটার তালিকায় তার নাম গনি মিয়া, পিতা- হাজি মৃত হুসমত উল্লা, সাং- বৈঠাখাল লিখা রয়েছে। ২০০৭ইং সালে বৈঠাখাল গ্রামের মৃত হছরত উল্লার পুত্র সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে জি.আর-১১২/০৭নং মামলা দয়ের করেন। সেখানেও তার নাম হাজী আব্দুল গনি, পিতা- মৃত হাজী হুসমত উল্লা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০৮ইং সালে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ভোটার তালিকা দেখা যায় গনি মিয়ার ছবি লাগিয়ে মৃত ব্যক্তি ইছরাক মিয়া, পিতা- মৃত ইছন মিয়া ও মাতা- মৃত মবজান বানু ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের আসল পরিচয় গোপন করে (নিবন্ধন ক্রমিক নং- ৩৬০৬১২৭৩৪৯৬৭) ইছরাক মিয়া নাম ধারন করেছেন। এমনকি ওই ভোটার তালিকায় (নিবন্ধন ক্রমিক নং- ৩৬০৬১২৭৩৪৪১২) অনুযায়ী আব্দুল হক, পিতা- মৃত হাজী ইছরাক মিয়া, মাতা- মৃত তেরাবুন খাতুন লিখা রয়েছে। যিনি গনি মিয়া বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। অপরদিকে ওই ভোটার তালিকার (নিবন্ধন ক্রমিক নং- ৩৬০৬১২৭৩৪৯৬৮) অনুযায়ী প্রতারক ইছরাক মিয়ার স্ত্রীর নাম মোছাঃ শাহানা বেগম উল্লেখ রয়েছে। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ১০নং দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু সনদ (নিবন্ধন বহি নং-০২, নিবন্ধন নং-০০০২৩৬) অনুযয়ী প্রকৃত ইছরাক মিয়া ১৯৮২ইং সালে মৃত্যু বরণ করেন। তার ছেলে আব্দুল আজিজ (নিবন্ধন বহি নং-০২, নিবন্ধন নং-০০০২৭১) ১৯৯৫ইং সালে ও তার (নিবন্ধন বহি নং-০২, নিবন্ধন নং-০০০২৭০) স্ত্রী তেরাবুন খাতুন ২০০২সালে মৃত্যু বরণ করেন। প্রকৃত ইছরাক মিয়া ও প্রতারক ইছরাক মিয়ার স্বাক্ষরও রয়েছে অনেক তফাৎ। আঃ গনি মিয়ার বিরুদ্ধে এতকিছু প্রমানাধি থাকা সত্বেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন ইছরাক মিয়া নামধারী গনি মিয়া লন্ডনী। এব্যাপারে গনি মিয়া লন্ডনীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আসল ইছরাক মিয়া। বেশী কিছু জানতে চাইলে আমার বাড়িতে এসে যেনে যান। অপরদিকে গনি মিয়ার তার প্রতারনার স্বীকার প্রকৃত ইছরাক মিয়ার পুত্র আব্দুল হক অভাব অনটনে দিনানিপাত করছেন। তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার পিতা লন্ডন থাকার সুবাদে প্রতারক গনি মিয়া এক সময় আমাদের পরিবারের পরিচালক ছিলেন, তিনি জালিয়াতী করে আমাদের অনেক জায়গা সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন এবং বর্তমানে আমার বসত বিঠাও দখলের পায়তারা করছেন। আমি এই প্রতরানর ন্যায় বিচার দাবী চাই।


     এই বিভাগের আরো খবর