,

শায়েস্তাগঞ্জে ট্রেনের টিকেট সংকট :: বিড়ম্বনায় যাত্রীরা

জুয়েল চৌধুরী : শায়েস্তাগঞ্জ হবিগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী ও বৃহৎ একটি রেলওয়ে জংশন স্টেশন। এটি সিলেট বিভাগের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এ জংশন দিয়ে প্রতিদিন শত শত যাত্রী এবং আন্তঃনগর ট্রেন, মেইল ট্রেন, সাধারণ মেইল, মালামাল গাড়িসহ প্রায় ১৬ টি ট্রেন চলাচল করে।
গুরুত্বপূর্ণ ও প্রথম শ্রেণির রেলস্টেশন হওয়ার পরও এ স্টেশনের জন্য আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে চাহিদার তুলনায় আসন বরাদ্দ কম। ফলে চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে যাতায়াতকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জংশন সূত্রে জানা গেছে, দিন ও রাতে চট্টগ্রাম এবং ঢাকাসহ অন্যান্য রুটে আন্তঃনগর মোট ৬টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম গামী আন্তঃনগর উদয়ন, পাহাড়িকা এবং ঢাকাগামী কালনী, জয়ন্তিকা, পারবত, উপবন আন্তঃনগর এক্সপ্রেস। আন্তঃ নগর ট্রেনগুলোর যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বরাদ্দকৃত আসন কম থাকায় টিকিট প্রাপ্তি নিয়ে দিন দিন জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনের বুকিং অফিস সূত্রে জানা যায়, ডাউন ট্রেন ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস আসন সংখ্যা ৬৫টি এর মধ্যে শোভন চেয়ার কাউন্টারে ৩৩টি , অনলাইনে ৩২টি, স্নিগ্ধা ৫টি, অনলাইনে ২টি এবং এসি আসন নাই। পারাবত এক্সপ্রেস আসন সংখ্যা ৩৫টি এর মধ্যে শোভন চেয়ার কাউন্টারে ১৮টি, অনলাইনে ১৭টি এবং স্নিগ্ধা ও এসি আসন নাই।
কালনী এক্সপ্রেস আসন সংখ্যা ৩০টি এর মধ্যে শোভন চেয়ার কাউন্টারে ১৫টি, অনলাইনে ১৫টি , স্নি”া আসন সংখ্যা ১০টি এর মধ্যে কাউন্টারে ০৫টি, অনলাইনে ০৫টি, এসি আসন সংখ্যা ৩টি এর মধ্যে কাউন্টারে ২ টি এবং অনলাইনে ০১টি। উপবন এক্সপ্রেস আসন সংখ্যা ৪৫টি এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৪৫টি , কাউন্টারে ২৩ টি এবং অনলাইনে ২২টি, স্নিগ্ধা আসন সংখ্যা ০৫টি এর মধ্যে কাউন্টারে ৩টি, অনলাইনে ০২টি এবং এসি আসন নাই। চট্টগ্রাম গামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস আসন সংখ্যা ৫৫ টি এর মধ্যে শোভন চেয়ার ২৮ টি, কাউন্টারে ২৭ টি, স্নিগ্ধা আসন সংখ্যা ০৮টি এর মধ্যে কাউন্টারে ৪টি এবং ০৪টি অনলাইনে, এসি আসন সংখ্যা ০৩টি এবং কাউন্টারে ০২টি এর মধ্যে ০১টি টিকেট অনলাইনে। উদয়ন এক্সপ্রেস শোভন চেয়ার আসন সংখ্যা ৫৫টি এর মধ্যে কাউন্টারে ২৮ টি, অনলাইনে ২৭ টি। অপর দিকে আপ ট্রেন সিলেট গামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস আসন সংখ্যা শোভন চেয়ার ৪০ টি এর মধ্যে কাউন্টারে ২০টি, অনলাইনে ২০টি , স্নিগ্ধা ০৪টি এর মধ্যে কাউন্টারে ০২টি , অনলাইনে ০২টি এবং এসি আসন নাই। পারাবত এক্সপ্রেস শোভন চেয়ার আসন সংখ্যা ৩৫ টি এর মধ্যে ১৮ টি কাউন্টারে , ১৭ টি অনলাইনে , স্নিগ্ধা আসন সংখ্যা ০৫টি এর মধ্যে কাউন্টারে ০৩টি বাকি ০২টি টিকেট অনলাইনে এবং এসি আসন সিট নাই। কালনী এক্সপ্রেস শোভন চেয়ার আসন সংখ্যা ৩০টি এর মধ্যে ১৫টি কাউন্টারে, অনলাইনে ১৫টি , স্নিগ্ধা আসন সংখ্যা ১০টি এর মধ্যে ০৫ টি কাউন্টারে , অনলাইনে ০৫টি, এসি আসন সংখ্যা ০৩টি এর মধ্যে ০২টি কাউন্টারে , অনলাইনে ০১টি। উপবন এক্সপ্রেস শোভন চেয়ার আসন সংখ্যা ৫৫টি এর মধ্যে কাউন্টারে ২৮টি, অনলাইনে ২৭টি, স্নিগ্ধা আসন সংখ্যা ০৫টি এর মধ্যে ০৩ টি কাউন্টারে, ০২টি অনলাইনে এবং এসি আসন নাই। পাহাড়িকা এক্সপ্রেস শোভন চেয়ার আসন সংখ্যা ৩০টি এর মধ্যে ১৫টি কাউন্টারে, অনলাইনে ১৫টি , স্নিগ্ধা আসন সংখ্যা ০৬টি এর মধ্যে কাউন্টারে ০৩টি, অনলাইনে ০৩টি এবং এসি আসন নাই। উদয়ন এক্সপ্রেস শোভন চেয়ার আসন সংখ্যা ৫০টি এর মধ্যে ২৫টি কাউন্টারে, অনলাইনে ২৫টি, স্নিগ্ধা আসন সংখ্যা ০৬টি এর মধ্যে ০৩টি কাউন্টারে, অনলাইনে ০৩টি এবং এসি আসন নাই।
এদিকে চাহিদার তুলনায় আসন বরাদ্দ একেবারে নগন্য। যাত্রীরা চট্টগ্রাম ও ঢাকা গামী যাওয়ার আসায় প্রতিদিন স্টেশন কাউন্টার এসে টিকেট না পাওয়ায় ফিরে যেতে হয়। বুকিং মাস্টার সোহাগ জানান, অনলাইন চালু হওয়ার পর থেকে অগ্রিম টিকিট ৫ দিন পূর্বে বিক্রি হয়ে যায়। যার ফলে যাত্রীরা টিকিট না পাওয়ার কারণে ৬ টি আন্তঃনগর ট্রেনের হাজারো উর্ধে প্রতিদিন যাত্রী আসন বিহীন টিকেট ক্রয় করে বিভিন্ন গন্ত্যবে যাতায়াত করে।
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনে চট্টগ্রাম গামী ও ঢাকা গামী কয়েকজন যাত্রী জানান, আসন বিহীন টিকেট ক্রয় করে ট্রেনের কামড়ার মাঝ পথে দাঁড়িয়ে থাকা হকারদের দৌরাত্ম্যের কারণে কস্টকর হয়ে পরে। রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী থাকলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না। ঢাকাগামী চেয়ে চট্টগ্রামের যাএী সংখ্যা খুব বেশি । ঢাকা ও চট্টগ্রাম গামী আন্তঃ নগর ট্রেন চালু থাকায় তুলনামূলক যাএীরা নিরাপদ যাএার কারণে অধিকাংশ লোকজন ট্রেনে যাতায়াত করে।
এছাড়া বাসের তুলনায় ট্রেনের টিকিট মূল্য কম হওয়ায় ট্রেন যাএীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্তব্য স্টেশন মাস্টার জানান, সিলেট বিভাগের মধ্যে শায়েস্তাগঞ্জ একটি ঐতিহাসিক জংশন স্টেশন অথচ এখানে আসন সংখ্যা অপ্রতুল। দিন দিন যাএী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে শায়েস্তাগঞ্জ জংশন স্টেশনে চট্টগ্রাম ও ঢাকা গামী আন্তঃ নগর ট্রেনের জন্য আরো ৩ শ আসন অথবা শায়েস্তাগঞ্জের জন্য একটি করে অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দ করা হলে এ সমস্যার কিছুটা সমাধান করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর