,

বাহুবলের ফয়জাবাদ হাই স্কুলে হামলা সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা সালিশে বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ

নূরুল ইসলাম মনি, বাহুবল থেকে ॥ বাহুবলের ফয়জাবাদ হাই স্কুলে হামলা-সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়েছে পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা। ফলে গতকাল সোমবার স্কুলে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি না থাকায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি মুখাবেলায় করণীয় নির্ধারণে স্কুলের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সমন্বয়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেলে পরিস্থিতি শান্ত দাবি করে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে হাজির হওয়ার জন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। রাতে সৃষ্ট বিরোধ সালিশে নিষ্পত্তিতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে। উক্ত সালিশ বৈঠক আগামী রোববার উপজেলা সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র জানায়, বাহুবল উপজেলার ফয়জাবাদ হাই স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীদের নিয়মিত যৌন হয়রানী করে স্থানীয় সুন্দ্রাটিকি গ্রামের কতিপয় বখাটে ছাত্র। এ বিষয়ে গত শনিবার বিদ্যালয়ে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে ওই বখাটেদের শাসানো হয়। এ ঘটনার জের ধরে পরদিন রোববার বখাটেরা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে এ নিয়ে সুন্দ্রাটিকি ও পূর্ব ভাদেশ্বর গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সকাল সোয়া ১০টার দিকে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষস্থল স্কুলের মাঠে হওয়ায় অফিসকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ২ ঘন্টা সংঘর্ষ চলাকালে স্কুলের অফিস কক্ষ সহ বিভিন্ন শ্রেণী কক্ষে ভাংচুর চালানো হয়। হামলা-সংঘর্ষে ছাত্রছাত্রী সহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। ভাংচুরের ফলে স্কুলের ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। ঘটনার দিন অপরাহ্নে ছাত্রছাত্রীর উপর হামলা-সংঘর্ষ ও স্কুলে ভাংচুরের ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল সমাবেশ করে স্থানীয় গ্রামবাসী। এ প্রেক্ষিতে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ফলে অজানা আতঙ্কে সোমবার নির্ধারিত সময়ে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে উপস্থিত হয়নি। পরিস্থিতি মুখাবেলায় বেলা ১১টার দিকে স্কুল মিলনায়তনে করণিয় নির্ধারণে শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই, ভাদেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মত্তাছির মিয়া, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হারুন আল রশিদ, সদস্য হেলাল উদ্দিন, সফর উদ্দিন, মনিরুজ্জামান ফারুক, আব্দুল খালিক মাস্টার, প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার দেব, ফয়জাবাদ পরগনার নেতা হুমায়ূন কবীর হিরণ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসিম, ভাদেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউল ইসলাম ও মোঃ দিদার আলী রশিদপুর চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি পিয়ারী দাস ও মুসলিম উদ্দিন প্রমুখ। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সোমবার বিকেলে মাইকিং করে স্থানীয় ছাত্র/ছাত্রীদের মঙ্গলবার থেকে যথারীতি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল হাই, থানা বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব আকাদ্দছ মিয়া বাবুল, ফয়জাবাদ পরগনার নেতা হুমায়ূন কবীর হিরন, ইউপি চেয়ারম্যান মত্তাছির মিয়া প্রমুখ নেতৃবৃন্দ সৃষ্ট বিরোধ সালিশ নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর উভয় পক্ষ উক্ত সালিশ প্রস্তাবে সম্মত হয়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ফয়জাবাদ হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হারুন আল রশীদ জানান, সৃষ্ট বিরোধ সালিশে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী রোববার উপজেলা সভাকক্ষে এ ব্যাপারে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত দাবি করে মঙ্গলবার থেকে স্থানীয় ছাত্র/ছাত্রীর স্কুলে যথারীতি আসার আহ্বান জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর