,

হবিগঞ্জে আরেকটি ছাত্রী নিপীড়ন এবার ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস ২ যুবক গ্রেফতার ॥ মূল নায়ক সিরাজ পলাতক

আব্দুল হামিদ/মাহফুজ নয়ন ॥ হবিগঞ্জ শহরে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা বাড়ছে। ১ সপ্তাহের ব্যবধানে ছাত্রী নিপীড়নের আরেকটি লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে। এবার লাঞ্ছিত নয়, অপহরণের পর ধর্ষণ করে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ওই ছাত্রীর পিতা ইউসুফ আলীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত ২ যুবককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো শহরের বগলাবাজার এলাকার মৃত নারায়ণ দেবের ছেলে রাজন দেব (২১) ও উমেদনগর এলাকার মৃত মাখন মিয়ার ছেলে নুরুল আলম (২১)। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে শহরের বগলাবাজার এলাকার তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি কম্পিউটার, ডিজিটাল ক্যামেরা ও বিভিন্ন ক্যাসেট জব্দ করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ আগস্ট শহরের বিকেজিসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণ করে পিটিআই রোডের একটি বাসায় আটকে রাখে শহরের কামড়াপুর এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে সিরাজ মিয়া (২১)। ওই দিনই সিরাজ তাকে ধর্ষণ করে এবং এ দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে তার বন্ধু নুরুল আলম। পরে ওই ভিডিও সিরাজ, তার বন্ধু নুরুল আলম ও রাজন ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, রাজন ওই ভিডিও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন যুবকের কাছে বিক্রি করে। এ ঘটনায় শহরে আলোড়ন সৃষ্টি হলে গত ৮সেপ্টেম্বর ভিডিওটি দেখতে পান ছাত্রীটির পিতা। ওইদিনই তিনি সিরাজকে প্রধান আসামি করে ৩ জনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে। এদিকে ঘটনার মূল নায়ক সিরাজকে ধরতে পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান শুরু করেছে। উল্লেখ্য, গত ২৬ আগস্ট হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর এলাকার এতিমখানা সড়কের মোবারক হোসেন নামে এক ব্যক্তির ভাগ্নে হবিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র রুহুল আমিন রাহুল প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ছাত্রী লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটে। সেই চড় থাপ্পরের দৃশ্যটি ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। গত ১ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখার পর সারাদেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। গত ৪ সেপ্টেম্বর রিচি গ্রাম থেকে বখাটে রাহুলকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে। বখাটে রাহুল কিশোর হওয়ায় আদালত তাকে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে প্রেরণের নির্দেশ দেন। ১ সপ্তাহের ব্যবধানে আরেকটি ছাত্রী নিপীড়নের ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। এজন্য তারা ভারতীয় ক্রাইম সিরিয়াল ও বাংলা নাটক-সিনেমার কুপ্রভাবকেই দায়ী করছেন। ক্রাইম সিকোয়েন্সগুলো দেখে যুব সমাজের মনোজগত নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক কমিটমেন্টের জায়গা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এজন্য প্রত্যেক অভিভাবককেই স্বোচ্চার ও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পাশাপাশি প্রশাসনকেও ইভটিজিং দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন। এদিকে পরপর দুটি ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় শহরের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত কমে গেছে। অভিভাবকরা বলছেন, আতংকে তারা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। এব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন জানান, বিষয়টি ন্যাক্কারজনক। উল্লেখিত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্যদের ধরতে বিভিন্নস্থানে অভিযান অব্যাহত আছে। পুলিশ ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।


     এই বিভাগের আরো খবর